ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের একটি স্কুলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কসংকেত বাজতেই আট বছরের শিশুদের একটি দল দ্রম্নত তাদের শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে বেজমেন্টে নেমে যায়। বই-খাতা হাতে নিয়ে তারা সেখানেই ক্লাস চালিয়ে যেতে থাকে। মুহূর্তের মধ্যেই আশ্রয়কেন্দ্রটি আবারও শিশুদের কোলাহলে ভরে ওঠে। কেউ হাতের লেখা অনুশীলন করছে। কেউ বই পড়ছে। আবার মাঝখানে শুরু হয়েছে নাচের ক্লাস। স্কুলের শিক্ষক লিউদমিলা ইয়ারোস্স্নাভৎসেভা বলেন, এই যুদ্ধই তাদের পরিণত করেছে। যুদ্ধের প্রথম বছরে যখন সাইরেন বাজত, তখন শিশুরা আতঙ্কে কাঁদতে শুরু করত। এখন তারা অনেকটাই অভ্যস্ত হয়ে গেছে। কিন্তু এর জন্য চড়া মূল্যও দিতে হচ্ছে-অবিরাম মানসিক চাপ। রাশিয়া ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রম্নয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণাঙ্গ হামলা চালানোর পর তিন বছর কেটে গেছে।
এই সময়ে যুদ্ধ থামেনি, বরং শিশুদের মনে ভয় ও উদ্বেগ স্থায়ী ক্ষত হিসেবে রয়ে গেছে। ইউক্রেনের শিক্ষা ও বিজ্ঞান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম নয় মাসেই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য ৫০ হাজারের বেশি শিশু পেশাদার সহায়তা চেয়েছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় তিন গুণ বেশি। যুদ্ধের শুরুতে শিশুদের নিরাপদে রাখাই প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু ২০২৩ থেকে মানসিক সহায়তার চাহিদা বাড়তে থাকে। ইউক্রেনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধকালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা চরম মানসিক আঘাতের শিকার হয়। তারা নিরাপত্তাহীনতা, বোমা হামলার ভয়, প্রিয়জন হারানো কিংবা বাড়িঘর হারানোর মতো কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে শিশুদের মধ্যে উদ্বেগ ও আচরণগত সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা দ্রম্নত শনাক্ত করে যথাযথ সহায়তা দেওয়া জরুরি। কিয়েভের এক স্কুলের ছবি আঁকা শেখানোর শিক্ষক ভ্যালেন্টিনা মারুনিয়াক বলেন, ২০২২ সালের তুলনায় শিশুদের আঁকা ছবিতে পরিবর্তন এসেছে। আগে তারা ট্যাংক, বিমান, বোমা বিস্ফোরণের ছবি আঁকত। সূত্র: রয়টার্স