বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২
জাতিসংঘের প্রতিবেদন

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা পুনর্গঠনে লাগবে ৫ হাজার ৩শ' কোটি ডলার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা পুনর্গঠনে লাগবে ৫ হাজার ৩শ' কোটি ডলার
ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজা ছাড়ছে ফিলিস্তিনিরা -ইন্টারনেট

টানা ১৫ মাস ধরে ইসরাইলের বর্বর আগ্রাসন ও হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা ভূখন্ড ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অবরুদ্ধ এই উপত্যকার পুনর্গঠন ও যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলজুড়ে চলমান মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রয়োজন ৫ হাজার ৩০০ কোটিরও বেশি মার্কিন ডলার। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। বার্তাসংস্থাটি বলছে, গাজা উপত্যকার পুনর্গঠনের জন্য ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলারেরও বেশি প্রয়োজন হবে বলে মঙ্গলবার জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আর এই অঞ্চলটি পুনর্গঠনের জন্য প্রথম তিন বছরে স্বল্পমেয়াদে প্রয়োজন ২০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "গাজা উপত্যকাজুড়ে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে পুনরুদ্ধার এবং পুনর্গঠনের জন্য ৫৩.১৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম তিন বছরে স্বল্পমেয়াদে প্রয়োজন প্রায় ২০.৫৬৮ বিলিয়ন ডলার।"

সংঘাতের ভয়াবহ অর্থনৈতিক ও মানবিক ক্ষতির কথা তুলে ধরে প্রতিবেদনে উলেস্নখ করা হয়েছে, গাজার অর্থনীতি ২০২৪ সালে ৮৩ শতাংশ সঙ্কুচিত হবে, বেকারত্ব ৮০ শতাংশে পৌঁছে যাবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে দারিদ্র্য ২০২৪ সালে ৭৪.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হয়েছে, যা ২০২৩ সালের শেষে ছিল ৩৮.৮ শতাংশ।"

গুতেরেস জোর দিয়ে বলেছেন, অবিলম্বে মানবিক প্রয়োজনগুলো পূরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার ভাষায়, "তাৎক্ষণিকভাবে এবং স্বল্পমেয়াদে মানবিক সংকট মোকাবিলায় জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা প্রদানের ওপর অবিরত মনোযোগের প্রয়োজন হবে।" ২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ৬.৬ বিলিয়ন ডলারের মানবিক সহায়তার আবেদনের কথা স্মরণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই আবেদন থেকে ৩.৬ বিলিয়ন ডলার গাজার ২১ লাখ ফিলিস্তিনির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা মেটাতে বরাদ্দ করা হয়েছে। গাজায় ছয়-সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায় গত ১৯ জানুয়ারি কার্যকর হয়েছে। সেদিন থেকেই গাজায় বন্ধ হয়েছে ইসরাইলি আগ্রাসন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলা এই আগ্রাসনে গাজায় ৪৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এছাড়া আরও ১ লাখ ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

তিন-পর্যায়ের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে। ভূখন্ডটিতে ইসরা্‌রাইলি হামলায় নিখোঁজ রয়েছেন ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ইসরাইল দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিল। ইসরাইল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে