গাজায় আগ্রাসন

গণহত্যা চালিয়েছে ইসরায়েল অভিযোগ অ্যামনেস্টির

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন সম্পূর্ণ মিথ্যা : দাবি ইসরায়েলের

প্রকাশ | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত গাজা
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজার ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এনেছে। লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, 'ইসরায়েলি সরকার ও সামরিক কর্মকর্তাদের অমানবিক ও গণহত্যামূলক বিবৃতি, স্যাটেলাইট ছবি থেকে পাওয়া ধ্বংসযজ্ঞ এবং গাজাবাসীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। তথ্যসূত্র : এএফপি, রয়টার্স সংস্থার প্রধান আনিয়েস কালামার এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'মাসের পর মাস গাজার ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে মানবাধিকার ও মর্যাদার অযোগ্য একটি অধম গোষ্ঠী হিসেবে আচরণ করেছে ইসরায়েল। তাদের শারীরিকভাবে শেষ করে দেওয়ার ইচ্ছা প্রদর্শন করেছে।' তিনি বলেন, তাদের প্রতিবেদনের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জেগে ওঠা উচিত। 'এটা গণহত্যা, এটা অবশ্যই এখন থামাতে হবে বলে জানান অ্যামনেস্টির প্রধান। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশনের অধীনে নিষিদ্ধ কাজ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে- বেসামরিক নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যা, গুরুতর শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি করা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের জীবনযাত্রাকে মানবেতর করে তুলেছে। এতে 'গাজা ভূখন্ডে ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস' করার ইসরায়েলের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য পরিলক্ষিত হয়েছে। মানবাধিকার গোষ্ঠীটি বলেছে, ইসরায়েল গাজায় মারাত্মক হামলা চালিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করেছে এবং গাজায় খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য সহায়তা সরবরাহে বাধা দিচ্ছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের দায় দিয়ে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপগুলোকে সমর্থন করা যায় না। প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলের ওপর বিভিন্ন ধরনের চাপ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে অ্যামনেস্টি। যেসব দেশ ইসরায়েলকে অস্ত্র দিচ্ছে, তারা কনভেনশনের আওতায় গণহত্যা প্রতিরোধে তাদের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে তার লঙ্ঘন করছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন কালামার। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজায় অন্তত ৪৪ হাজার ৫৩২ জন নিহত হয়েছেন বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক। জাতিসংঘ গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিশ্বাসযোগ্য মনে করে। উলেস্নখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। এদিকে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনটিকে 'সম্পূর্ণ মিথ্যা' বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, 'দুঃখজনক ও ধর্মান্ধ সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আবারও একটি বানোয়াট প্রতিবেদন তৈরি করেছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে।' বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'এটির পরিবর্তে ইসরায়েলে ৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে হামাসের নজিরবিহীন হামলাটি গণহত্যা ছিল।' তারা বলেছে, 'ইসরায়েল আত্মরক্ষা করছে, আন্তর্জাতিক আইন মেনে কাজ করছে।'