ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠক

কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়ার প্রস্তাব ট্রাম্পের

ট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে কানাডার অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন জাস্টিন ট্রুডো

প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্প জাস্টিন ট্রুডো
প্রতিবেশী দেশ কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম ফক্স নিউজের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি অবৈধ অভিবাসী ঠেকাতে এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ব্যর্থ হলে কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প। ওই শুল্ক ইসু্যতে কথা বলতে গত ২৯ নভেম্বর অঘোষিত সফরে যুক্তরাষ্ট্রে যান কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সফরকালে ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা হয় কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রীর। এ সময় ট্রুডো শুল্ক এত বেশি হলে কানাডার অর্থনীতিতে প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বাণিজ্য ও অভিবাসন ইসু্যতে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে কানাডার অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন জাস্টিন ট্রুডো। এ সময় ট্রাম্প জাস্টিন ট্রুডোকে বলেন, 'যদি যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত শুল্ক ও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অভিবাসন সমস্যা সমাধান না করে কানাডার অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলে, তাহলে কানাডার উচিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়ে যাওয়া।' ফক্স নিউজ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে। সপ্তাহখানেক আগে ট্রাম্প কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। সেই ঘোষণার পর কোনো পূর্বাভাস না দিয়েই ট্রুডো ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানে বৈঠক করেন দুই নেতা। এখন ওই বৈঠক সম্পর্কে নতুন কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ট্রাম্প এই আলোচনাকে 'খুবই ফলপ্রসূ' বলে উলেস্নখ করেছেন। শুল্ক, সীমান্ত নিরাপত্তা ও বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়গুলোই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। ট্রাম্প-ট্রুডোর আলোচনার টেবিলে উপস্থিত দুই ব্যক্তির মতে, ট্রাম্প ট্রুডোকে স্বাগত জানালেও কানাডার প্রতি তিনি খুবই কঠোর ও স্পষ্টভাষী ছিলেন। আলোচনার সময় ট্রাম্প ট্রুডোকে বলেন, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে। ৭০ টিরও বেশি দেশ থেকে অবৈধ অভিবাসী এবং বিপুল পরিমাণ মাদক যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছে। সূত্রমতে, যখন ট্রাম্প কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির প্রসঙ্গ তোলেন, তখন তিনি আরও বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি দাবি করেন, এই ঘাটতি ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ট্রাম্প ট্রুডোকে বলেন, যদি কানাডা সীমান্ত সমস্যা ও বাণিজ্য ঘাটতি সমাধান করতে না পারে, তবে তিনি প্রথম দিনেই কানাডার সব পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করবেন। এরপরও কিন্তু ট্রাম্প এই ইসু্যতে তার কথা চালিয়ে যান। তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী পদটি বেশ ভালো, তবে ৫১তম অঙ্গরাজ্যের গভর্নর হলেও সেটা মন্দ হবে না।' এ সময় আলোচনায় উপস্থিত এক ব্যক্তি ট্রাম্পকে মনে করিয়ে দেন যে, কানাডা একটি উদারপন্থি অঙ্গরাজ্য হবে। বিষয়টি আরও হাস্যরসের সৃষ্টি করে। তখন ট্রাম্প প্রস্তাব দেন, কানাডা দুটি অঙ্গরাজ্যে বিভক্ত হতে পারে- একটি রক্ষণশীল এবং অন্যটি উদারপন্থি। ট্রাম্প ট্রুডোকে উদ্দেশ করে আরও বলেন, 'যদি আপনি আমার শর্তগুলো পূরণ করতে না পারেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ঠকিয়ে যেতে থাকেন, তাহলে হয়তো কানাডার সত্যিই একটি বা দুটি অঙ্গরাজ্য হয়ে যাওয়া উচিত। আর ট্রুডো তখন গভর্নর হতে পারবেন।' সূত্রমতে, যদিও কথোপকথনে অনেক হাসি-ঠাট্টা হলেও ট্রাম্প স্পষ্ট করে দেন যে, তিনি জানুয়ারির ২০ তারিখের মধ্যে পরিবর্তন আশা করছেন। প্রায় তিন ঘণ্টার এই বৈঠকে আরও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। কানাডীয় অতিথিরা বৈঠকটিকে 'খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ এবং ইতিবাচক' হিসেবে বর্ণনা করেন।