ইসরায়েলি আগ্রাসন

গাজায় জাতিসংঘ কর্মীসহ নিহত আরও ১০০ ফিলিস্তিনি

ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে হুতির ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সিরিয়ার আলেপ্পো শহরের বেশিরভাগ এলাকা দখলে নেওয়া বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে তিন শতাধিক বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সমর্থনে সিরিয়ার এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রুশ সামরিক বাহিনীর হামলা চালাচ্ছে। ছবিটি রোববার দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইদলিব থেকে তোলা। যেখানে রাশিয়া হামলায় সিরিয়ার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'হোয়াইট হেলমেট'কর্মীদের একটি গাড়ি আগুনে পুড়ে যায় -রয়টার্স অনলাইন
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে ইসরায়েলি হামলায় এক দিনে কমপক্ষে আরও ১০০ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে চারজন মার্কিন দাতব্য সংস্থা-ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন ও সেভ দ্য চিলড্রেনের কর্মী। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার ৪০০ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, এএফপি, রয়টার্স বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে। একক এই বিমান হামলাতেই কমপক্ষে ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে শনিবার ইসরায়েলের হামলায় নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ১০০ জনে পৌঁছেছে। এর আগে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় খাদ্য সহায়তার অপেক্ষায় থাকা অন্তত ১২ ফিলিস্তিনি এবং ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন ও সেভ দ্য চিলড্রেনের চারজন কর্মী নিহত হন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ হাজার ৩৮২ জনে পৌঁছেছে বলে শনিবার অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা লাগাতার এই হামলায় আরও অন্তত এক লাখ পাঁচ হাজার ১৪২ জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারের বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডে তার নৃশংস হামলা অব্যাহত রেখেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইসরায়েলি হাশলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচু্যত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সবাই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। উলেস্নখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলে হুতির ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এদিকে, ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে দেশটির বিদ্রোহী হুতি যোদ্ধারা। তবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলছে, ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ছোঁড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের সীমানার বাইরে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিহত করা হয়েছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যম বলেছে, এ ঘটনার সময় মধ্য ইসরায়েলে সাইরেন বেজে ওঠে। তবে ইসরায়েলের ভূখন্ডে গিয়ে আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে জানা গেছে। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। রোববার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, ইয়েমেন থেকে উৎক্ষেপণ করা একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি ভূখন্ডে প্রবেশের আগেই আটকে দেওয়া হয়। সামরিক বাহিনী এর আগে বলেছিল, ইয়েমেন থেকে উৎক্ষেপণের পর মধ্য ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি এলাকায় সাইরেন বাজছিল। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হুতি যোদ্ধারা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ধারাবাহিকভাবে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলার মাধ্যমে হামলা করে আসছে।