সাফ জানালেন কিম

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার অধিকার আছে রাশিয়ার

প্রকাশ | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
কিম জং-উন
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে আমেরিকার সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপের ফলে ইউক্রেন দূরপালস্নার অস্ত্রের ব্যবহার করছে। ফলে আত্মরক্ষার জন্য লড়াইয়ের অধিকার রয়েছে রাশিয়ার। শুক্রবার রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসোভের সঙ্গে বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন এই মন্তব্য করেন। উলেস্নখ্য, বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চলতি মাসে ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভূখন্ডের অভ্যন্তরে আমেরিকার দেওয়া আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা দেশটির রাষ্ট্রীয় সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (কেসিএনএ) খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসভের সঙ্গে দেখা করেছেন কিম। তখন তিনি বলেছেন, "কিয়েভ কর্তৃপক্ষকে আমেরিকার তৈরি দূরপালস্নার অস্ত্র দিয়ে রুশ ভূখন্ডে আক্রমণ করতে বাধ্য করেছে আমেরিকা ও পশ্চিমারা। রাশিয়ার উচিত 'শত্রম্ন শক্তিকে মূল্য চোকাতে' পদক্ষেপ নেওয়া।" কিমের বরাত দিয়ে কেসিএনএ জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া সরকার, সেনাবাহিনী ও জনগণ সর্বদা রুশ সরকারের নীতিকে সমর্থন করবে দেশটির সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখন্ডতাকে আধিপত্যের জন্য সাম্রাজ্যবাদীদের পদক্ষেপ থেকে রক্ষা করতে। কিম রাশিয়ার অভ্যন্তরে ইউক্রেনকে মার্কিন দূরপালস্নার অস্ত্র ব্যবহার করে হামলার অনুমতি দেওয়ার জন্য মার্কিন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি আমেরিকার সরাসরি হস্তক্ষেপ হিসেবে, এটিকে ওয়াশিংটনের 'রাশিয়া-বিরোধী' পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। তার মতে, আমেরিকার এই পদক্ষেপ দীর্ঘায়িত সংঘাতকে উসকে দেওয়ার এবং মানবজাতির জন্য হুমকিস্বরূপ দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ। ইউক্রেনে সম্প্রতি রাশিয়ার ব্যাপক হামলা নিয়ে কিম বলেছেন, রাশিয়ার সংকল্প প্রদর্শনের জন্য এটি সময়োপযোগী ও কার্যকর একটি পদক্ষেপ। রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়া সাম্প্রতিক সময়ে তাদের সামরিক সম্পর্ক গভীর করেছে। মস্কোকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহায়তা করার জন্য পিয়ংইয়ং হাজার হাজার সেনা পাঠিয়েছে। আমেরিকা, ইউক্রেন, দক্ষিণ কোরিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর পর্যবেক্ষণ বলছে, ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে সাহায্য করতে উত্তর কোরিয়া ১০ হাজারের বেশি সেনা রাশিয়ায় পাঠিয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু সেনা এরই মধ্যে সামনের সারিতে যুদ্ধে নিয়োজিত হতে শুরু করেছে। তারা আরও বলেছে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার খালি হতে হওয়া অস্ত্রভান্ডার শক্তিশালী করতে আর্টিলারি সিস্টেম, ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্যান্য প্রচলিত অস্ত্রও পাঠিয়েছে। উত্তর কোরিয়া বা রাশিয়া কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। অস্ত্রের চালানের খবরকেও দূঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে। দক্ষিণ কোরিয়া, আমেরিকা এবং তাদের মিত্রদের আশঙ্কা, রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে আরও শক্তিশালী পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে সহায়তা করার বিনিময়ে উন্নত অস্ত্র প্রযুক্তি নিতে পারে। গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিন ওন-সিক স্থানীয় 'এসবিএস টিভি'কে বলেছেন, রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, মস্কো পিয়ংইয়ংকে অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সামরিক প্রযুক্তি দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। চলতি বছরের জুন মাসে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জন-উন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন একটি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। হামলার ঘটনা ঘটলে উভয় দেশ একে-অপরকে তাৎক্ষণিক সামরিক সহায়তা দেবে এই চুক্তিবদ্ধ হয়। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশ দুটির মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা চুক্তি এটি।