পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকা 'চূড়ান্ত বিক্ষোভ' কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় ইমরান ও তার স্ত্রীসহ দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আটটি মামলা হয়েছে। ইসলামাবাদ পুলিশ বাদী হয়ে বুধবার এ মামলা করে। এদিকে, এই কর্মসূচিকে ঘিরে তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) বিভিন্ন স্তরের প্রায় এক হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তথ্যসূত্র : ডন, জিও নিউজ

দেশটির ফেডারেল মন্ত্রিসভার বৈঠকে বুধবার ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, 'আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, আমরা পাকিস্তানকে বাঁচাব, নাকি বসে যেতে দেব।' এই বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পরেই ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে মামলার পদক্ষেপ নেয় ইসলামাবাদ পুলিশ।

ইসলামাবাদের শাহজাদ টাউন, সিহালা, খান্না, শামস কলোনি, নুন, নিলোর, তরনল, বানিগালাসহ বিভিন্ন থানায় মামলাগুলো নথিভুক্ত করা হয়েছে। এসব মামলায় ইমরান খান, তার স্ত্রী বুশরা বিবি ও পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম রয়েছে। যার মধ্যে আলি আমিন গন্ডাপুর, সালমান আকরাম রাজা ও শেখ ওয়াকাস আকরামও রয়েছেন। মামলায় দলের স্থানীয় নেতৃত্ব ছাড়াও হাজার হাজার ব্যক্তির নাম রয়েছে। মামলাগুলোর মধ্যে সন্ত্রাস, পুলিশের ওপর হামলা, ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন, অপহরণ এবং সরকারি কাজে হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে।

সাবেক ক্ষমতাসীন দল পিটিআইয়ের প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘিরে ইসলামাবাদে ইমরানের সমর্থক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে মঙ্গলবার ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ বেশ কয়েকটি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেই ইসলামাবাদের ডি-চক এলাকায় এগোতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। একপর্যায়ে বুধবার ভোররাতে বুশরা বিবি সমাবেশস্থলে পৌঁছানোর আগেই নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে হঠাৎ করে বিক্ষোভ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় পিটিআই। বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহারের বিষয়ে পিটিআই জানায়, সরকারের নৃশংস পদক্ষেপের কারণে শান্তিপূর্ণ সামবেশ আপাতত স্থগিত করা হলো। ইমরান খানের পরবর্তী দিকনির্দেশনা অনুযায়ী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে বলেও জানিয়েছে সাবেক ক্ষমতাসীন দলটি।

২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচু্যত হওয়ার পর থেকে ইমরান খান একাধিক মামলায় অভিযুক্ত হন। ২০২৩ সালের মে মাসে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এরপর এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে রয়েছেন ইমরান। তার বিরুদ্ধে ১৫০টির বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। পিটিআইয়ের দাবি, মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।