ইসরায়েলি ভূখন্ডে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রোববার হামলা চালিয়েছে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুলস্নাহ। যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটল। এ ছাড়া দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি নৌঘাঁটিতেও প্রথমবারের মতো হামলা করেছে গোষ্ঠীটি। এসব হামলায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১ জন। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, এএফপি
হিজবুলস্নাহ বলেছে, তারা 'প্রথমবারের মতো' দক্ষিণ ইসরায়েলের আশদোদ নৌ-ঘাঁটিতে হামলা করেছে। উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র এবং স্ট্রাইক ড্রোন ব্যবহার করে তেল আবিবের একটি 'সামরিক লক্ষ্যবস্তুতেও' অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।
এদিকে, হিজবুলস্নাহর হামলার মধ্যে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তেল আবিবের শহরতলীসহ মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে বিমান হামলার সাইরেন বাজানোর খবর দিয়েছে। সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা উত্তর ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ছোড়া বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র আটকে দিয়েছে। লেবানন থেকে ২৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। পরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রেডিও জানায়, লেবানন থেকে '৩৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র' নিক্ষেপ করা হয়েছে। এই হামলায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন 'মাঝারি থেকে গুরুতর' অবস্থায় রয়েছেন বলে চিকিৎসা সংস্থাগুলো জানিয়েছে।
মধ্য বৈরুতে ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ২৯ জন নিহত হওয়ার একদিন পর হিজবুলস্নাহর এই হামলার ঘটনা ঘটল। লেবাননের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এই হামলায় অন্তত ৬৬ জন আহত হয়েছেন। লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি এটিকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টার ওপর আক্রমণ হিসেবে আখ্যায়িত করে নিন্দা জানিয়েছেন। ইসরায়েলি এই হামলাকে যুদ্ধ শেষ করার জন্য 'সব প্রচেষ্টা এবং চলমান যোগাযোগকে প্রত্যাখ্যান করার সরাসরি, রক্তাক্ত বার্তা' বলেও অভিহিত করেছেন তিনি।
হিজবুলস্নাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি ইসরায়েল
এদিকে, লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুলস্নাহর সঙ্গে আমেরিকার দেওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে নীতিগতভাবে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। রোববার রাতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়ার কথা জানান। এরই মধ্যে ইসরায়েলের সিদ্ধান্ত লেবাননকে জানানো হয়েছে।
সম্ভাব্য মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে যাবে ইসরায়েল ও হিজবুলস্নাহ। একে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ভিত্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রস্তাবে বলা হয়, ইসরায়েল সংলগ্ন দক্ষিণ লেবানন, বিশেষ করে লিতানি নদীর দক্ষিণে হিজবুলস্নাহর কোনো অবস্থান থাকবে না। সেখানে সশস্ত্র গোষ্ঠী বলতে কেবল লেবাননের সেনাবাহিনী ও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা অবস্থান করতে পারবে।
ইসরায়েল, আমেরিকা ও লেবাননের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে একাধিক ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, যদিও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি এখনো চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি। বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আরও আলোচনা করতে হবে, তবে তেল আবিব যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের মূল নীতিগুলোকে স্বাগত জানিয়েছে।