ইসরায়েলি আগ্রাসন

গাজায় নিহত ৪৪ হাজার ছাড়াল

উত্তর গাজায় রাতভর হামলায় ৬৫ ফিলিস্তিনি ও লেবাননে বিমান হামলায় ৪৭ জন নিহত

প্রকাশ | ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষের মধ্যেই ফিলিস্তিনিরা একটি বেকারি থেকে রুটি কিনতে জড়ো হয়েছেন। ছবিটি শুক্রবার তোলা -রয়টার্স অনলাইন
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও অন্তত ৮৭ জন নিহত হয়েছেন। এর ফলে সংঘাত শুরুর পর থেকে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে নিহতের সংখ্যা ৪৪ হাজার ছাড়িয়েছে। কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডা. হোসাম আবু সাফিয়া জানিয়েছেন, উত্তর গাজায় বৃহস্পতিবার রাতভর হামলায় ৬৫ জন নিহত হয়েছেন। হামলার সময় সেখানে প্রায় ২০০ জন ছিলেন। তথ্যসূত্র : এএফপি, আল-জাজিরা আবু সাফিয়া বলেন, হাসপাতালের মেডিকেল টিম ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ৬৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। কোনো আধুনিক উদ্ধার সরঞ্জাম না থাকায় হাত দিয়েই কাজ করতে হচ্ছে। ডা. সাফিয়া সতর্ক করেন, যদি আন্তর্জাতিক সহায়তা না আসে এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম না পৌঁছায়, তবে হাসপাতালটি 'গণকবরে' পরিণত হতে পারে। এ ছাড়া বুধবার মধ্য গাজার শেখ রাদওয়ান এলাকায় একটি বাড়িতে হামলায় অন্তত ২২ জন নিহত হন, তাদের মধ্যে ১০ জনই শিশু। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ড. মুনির আলবুরশ জানান, হতাহতদের উদ্ধারের কাজ এখনো চলছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এই হামলাগুলোর বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। হামলাগুলো এমন সময়ে ঘটল, যখন গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর উত্তরাঞ্চলীয় অভিযান নতুন করে জোরদার হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৫৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখ চার হাজারের বেশি মানুষ। হতাহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গাজার সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানালেও তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে দুর্বল ও অকার্যকর না করা এবং জিম্মিদের মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৪৭ এদিকে, পূর্ব লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৪৭ জন নিহত হয়েছেন। এ হামলা বৃহস্পতিবার পরিচালিত হয়। লেবাননের এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আমেরিকার মধ্যস্থতায় ইরান সমর্থিত হিজবুলস্নাহকে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিতে ইসরায়েল এমন হামলা চালিয়েছে। মার্কিন মধ্যস্থতাকারী আমোস হোস্টেইন গত মঙ্গলবার লেবানন সফর করেন এবং সেখানে তিনি যুদ্ধবিরতির আলোচনা হওয়ার কথা জানান। তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করেন। লেবাননের ওই কর্মকর্তা জানান, আমেরিকার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কিছু পরিবর্তন চাওয়া হয়েছে। বিশেষ করে, দক্ষিণ লেবানন থেকে যতদ্রম্নত সম্ভব ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে নিশ্চয়তা চাওয়া হয়েছে। গাজায় এক বছর ধরে চলা যুদ্ধে ইরান সমর্থিত হিজবুলস্নাহর সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘর্ষ বন্ধ করতে বেশ জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে। লেবাননের বালবেক হারমেল প্রদেশের গভর্নর বাছের খদর জানান, ইসরায়েলি হামলায় বালবেক অঞ্চলে ৪৭ জন নিহত এবং ২২ জন আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে। সিরিয়ার সীমান্তের কাছে অবস্থিত এ অঞ্চলটি হিজবুলস্নাহর দখলে রয়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে ওই অঞ্চলে ইসরায়েলি হামলা শুরু হলে, অনেক বাসিন্দা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হিজবুলস্নাহর অবকাঠামোকে লক্ষ্য করেই এ হামলা চালানো হয়েছে, এবং হামলার আগেই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল।