শীত মৌসুম শুরুর আগেই ভয়াবহ বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারতের রাজধানী দিলিস্ন। প্রতিদিনই বাতাসের মানের অবনতি এবং তা 'খুব খারাপ' পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় এবার দিলিস্নতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি
দিলিস্নর বাতাসে দূষণের মাত্রা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে গত ২৪ ঘণ্টার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) মান হয়েছে ৪৮৪। আর সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় শহরটিতে বায়ুর গুণগত মান ছিল ৪৮৫। এই মান 'চরম বিপজ্জনক' শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। সুইস সংস্থা 'আইকিউএয়ারে'র লাইভ র?্যাংকিং অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর হিসেবে শীর্ষে রয়েছে দিলিস্ন। শহরের বায়ুতে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ধূলিকণার (পিএম টু পয়েন্ট ফাইভ) উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত মাত্রার ১৩০ গুণ বেশি পাওয়া গেছে।
দিলিস্নর বায়ুদূষণ উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছানোর পর আগেই বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল প্রাথমিক স্কুল। আর এবার উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলও বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিলিস্ন সরকার। ক্লাস হবে অনলাইনে। কেবল দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস অফলাইনে হবে। অন্যদিকে, কর্মক্ষেত্রেও ৫০ শতাংশ কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, সোমবার এই মৌসুমের দূষিততম দিনের সাক্ষী হয়েছেন দিলিস্নর বাসিন্দারা। আর তাই দূষণ রুখতে আট দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে দিলিস্ন প্রশাসন। এরপরও অবশ্য দূষণে লাগাম টানা যাচ্ছে না।
বিগত এক সপ্তাহ ধরেই 'ভয়াবহ' বায়ুদূষণের শিকার দিলিস্নর বাসিন্দারা। দিন-দুপুরেও ঘন ধোঁয়াশায় ঢাকা থাকছে ভারতের এই রাজধানী শহর। ফলে কমেছে দৃশ্যমানতা। দেরিতে চলছে ট্রেন ও ফ্লাইট। যাত্রীদের অতিরিক্ত সময় হাতে নিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরামর্শ দিচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলো।
উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে 'গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন পস্ন্যান' (গ্র্যাপ-৩) চালু করেছে দিলিস্ন সরকার। এর মাধ্যমে আট দফা বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়েছে। আর এর ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বহনকারী ট্রাক ছাড়া অন্য ভারী যানবাহন আপাতত দিলিস্নতে প্রবেশ করতে পারবে না।
এ ছাড়া আধুনিকতম ইঞ্জিনবিশিষ্ট গাড়ি ছাড়া অন্য ছোট গাড়ি প্রবেশের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। আপাতত অবকাঠোমা নির্মাণের কাজও স্থগিত করতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, সোমবার সকালে ধোঁয়াশার দেখা মিলেছে আরব সাগরের উপকূলবর্তী শহর মুম্বাইয়েও। ভারতের এই বাণিজ্য নগরীতে বায়ুর গুণগত মান ১৭৯। তবে এ ধরনের ধোঁয়াশা শেষ কবে দেখা গেছে, সেটা মনে করতে পারছেন না মুম্বাইবাসী।
দূষণের কারণে দিলিস্ন বিমানবন্দরের দৃশ্যমানতা কমে দাঁড়িয়েছে ১০০ মিটারে। এর জেরে বিপর্যস্ত ফ্লাইট চলাচল। দিলিস্ন বিমানবন্দর থেকে প্রায় সব ফ্লাইটই আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা দেরিতে চলছে।