আগ্রাসন
গাজা-লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৪৫
প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবাননজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ বিমান হামলায় এক দিনে কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গাজায় নিহত হয়েছেন ২৪ ফিলিস্তিনি। এছাড়াও লেবাননে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ২১ জন। তথ্যসূত্র : আনাদলু, আল-জাজিরা, রয়টার্স
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩ হাজার ৭৩৬ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিরামহীন এই হামলায় আরও অন্তত এক লাখ তিন হাজার ৩৭০ জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ২৪ জন নিহত এবং আরও ১১২ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন।
অন্যদিকে, লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গত ২৪ ঘণ্টার অভিযানে আরও ২১ জন নিহত এবং ৭৩ জন আহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা দখলদার ইসরায়েলের হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে তিন হাজার ৩৮৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ১৪ হাজার ৪০০ জনের বেশি।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় নাবাতিহ এলাকায় সিভিল ডিফেন্স সেন্টারে দখলদার ইসরায়েলের হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে চার লেবানিজ প্যারামেডিকও রয়েছেন। এছাড়াও বালবেক শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমে সিভিল ডিফেন্স সেন্টারে হওয়া দ্বিতীয় হামলায় আরও ১২ জন উদ্ধারকর্মী নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তাদের যুদ্ধবিমানগুলো অস্ত্রের গুদাম, সামরিক সদর দপ্তর ও হিজবুলস্নাহর অন্য স্থানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করছে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে অবগত সূত্র জানিয়েছেন, দাহিয়েহ নামে পরিচিত শহরতলির আকাশে ধোঁয়ার কুন্ডলী উঠতে দেখা গেছে। সেখানে ইসরায়েলি হামলায় পাঁচটি ভবন ধ্বংস হয়েছে। আয়াত নামের ৩৩ বছর বয়সি এক লেবানিজ নারী বলেন, 'আমরা বলছিলাম, ঈশ্বর আমাদের সাহায্য করুন।'
গত বছরের অক্টোবরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুলস্নাহর সঙ্গে সংঘাত চলছে দখলদার ইসরায়েলের। তবে গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে হিজবুলস্নাহর সঙ্গে ইসরায়েলের পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানী বৈরুতের পাশাপাশি লেবাননজুড়ে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুলস্নাহর অপারেটিভস, অবকাঠামো এবং অস্ত্রাগার লক্ষ্য করে এই হামলা চলছে। হিজবুলস্নাহও পাল্টা আঘাত হানছে। লেবাননে অভিযানরত ইসরায়েলি সেনা সদস্যদের হত্যার পাশাপাশি ইসরায়েলের বেশ গভীরে সামরিক ঘাঁটিতে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালাচ্ছে শক্তিশালী এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। এমন অবস্থায় যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে অনেক দূরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ইরান।
লেবাননে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা
এদিকে, লেবাননে বৃহস্পতিবার মার্কিন রাষ্ট্রদূত দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার নাবিহ বেরির কাছে যুদ্ধবিরতির একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছেন। লেবাননের দুই সিনিয়র রাজনৈতিক সূত্র এই তথ্য জানিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তারা। সূত্র জানিয়েছেন, অন্তত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইসরায়েল ও হিজবুলস্নাহর মধ্যকার যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য ওয়াশিংটনের প্রথম লিখিত প্রস্তাব এই খসড়া।
একটি সূত্র বলেছেন, 'এটি লেবাননের পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণ পাওয়ার জন্য একটি খসড়া।' প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে বৈরুতে মার্কিন দূতাবাসের এক মুখপাত্র বলেন, 'কূটনৈতিক চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা চলছে।'