আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। এ সময় ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ আর না বাড়াতে পুতিনকে পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের আলাপচারিতা ছিল সৌহার্দপূর্ণ বলে এ বিষয়ে অবগত একটি সূত্র রোববার জানিয়েছেন। তথ্যসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, এএফপি
সূত্রটি জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোর ভেতরেই ট্রাম্প ও পুতিন কথা বলেছেন। এর আগে গত বুধবার ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেন। উলেস্নখ্য, নির্বাচনের আগে ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের সামরিক ও আর্থিক সহায়তার ব্যাপ্তি নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছিলেন। তার দাবি, দায়িত্ব পেলে ২৪ ঘণ্টায় তিনি যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারবেন। তবে তার পরিকল্পনার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ট্রাম্প ও পুতিনের কথোপকথন সম্পর্কে তারা আগে থেকে অবগত ছিল না। ফলে তাদের দিক থেকে কোনো সমর্থন বা বিরোধিতা প্রকাশ করা হয়নি। ট্রাম্পের কমিউনিকেশনস পরিচালক স্টিভেন চিয়াং বলেছেন, 'প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও অন্য বিশ্বনেতাদের মধ্যে ব্যক্তিগত কথোপকথন সম্পর্কে আমরা কোনো মন্তব্য করি না।' এই ফোনকলের বিষয়ে ওয়াশিংটনে অবস্থিত রুশ দূতাবাসও কোনো মন্তব্য করেনি। ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, পুতিনকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ থামানোর অনুরোধ জানিয়েছেন ট্রাম্প।
পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপের বিষয়ে 'ওয়াশিংটন পোস্টে' প্রথম সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদ মাধ্যমটির রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার ফ্লোরিডায় নিজের বাসভবন থেকেই পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ করেন ট্রাম্প। সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে, তাদের কথোপকথনের মূল বিষয় ছিল ইউক্রেন যুদ্ধ। ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য এবং সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ট্রাম্প আরও আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
নির্বাচনে জয়ের পরই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিনকে ফোন করেন প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার ফ্লোরিডায় নিজের বাসভবন থেকেই পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ করেন ট্রাম্প। তখনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলপ্রকাশ সম্পূর্ণ হয়নি। তার আগেই দুই নেতার মধ্যে কথা হয়। সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে, তাদের কথোপকথনের মূল বিষয় ছিল ইউক্রেন যুদ্ধ।
মার্কিন সরকারের জবাবদিহি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাইডেনের সময় ইউক্রেনকে ১৭ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বেশি সহায়তা দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে কংগ্রেস। সহায়তার এই পরিমাণ যে ট্রাম্পের আমলে অনেকটা হ্রাস পাবে, এটা মোটামুটি নিশ্চিত।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে দ্রম্নত এই সংকট সমাধানে আগ্রহী ট্রাম্প, নির্বাচনের আগেই তা জানা গিয়েছিল। অনেকেই মনে করছেন, জো বাইডেন প্রশাসনের মতো ট্রাম্প কোটি কোটি ডলার দিয়ে ইউক্রেনকে যুদ্ধে সহায়তা করবেন না। বরং তিনি যুদ্ধ থামাতে বেশি আগ্রহী। তিনি ক্ষমতায় আসার পর গত আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে বলেও অনেকে আশা প্রকাশ করছেন। বিশ্লেষকদের মতে, দ্রম্নত যুদ্ধ নিরসনের যে কোনো চুক্তির কেন্দ্রে থাকবে রাশিয়া এরই মধ্যে ইউক্রেনের যেটুকু ভূখন্ড দখল করেছে, তার দাবি ছেড়ে দেওয়া।
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষের আগ্রহ
প্রকাশ করলেন জেলেনস্কি
এদিকে, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে কথা বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ইউক্রেনের দুয়ার সব সময় আদর্শিক কূটনীতির জন্য উন্মুক্ত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি মিত্রদের শক্তি প্রয়োগের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।