আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
কমলার পরাজয়ে বাইডেনকে দায়ী করলেন ন্যান্সি
বাইডেন যদি নির্বাচন থেকে আগে সরে দাঁড়াতেন, তাহলে ডেমোক্রেটিক পার্টি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করতে পারত
প্রকাশ | ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসের পরাজয়ের জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দায়ী করেছেন প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির এই প্রভাবশালী নেতা বলেছেন, জো বাইডেন যদি নির্বাচন থেকে আগে সরে দাঁড়াতেন, তাহলে ডেমোক্রেটিক পার্টি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করতে পারত। তথ্যসূত্র : বিবিসি, গার্ডিয়ান
'নিউইয়র্ক টাইমস'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, বাইডেন যদি আরও আগে সরে দাঁড়াতেন (নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার দৌড় থেকে), তাহলে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য প্রতিযোগিতার (প্রাইমারি) সুযোগ থাকত। তার মতে, নির্বাচনী দৌড় থেকে বাইডেনের সরে আসতে বিলম্ব ডেমোক্রেটদের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, 'যা ঘটেছে, তা নিয়েই আমরা চলছি।'
আমেরিকার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্বাচন করতে কয়েক মাস ধরে নির্বাচনী প্রচার ও বিতর্ক চলে। জো বাইডেন আবার নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পর ডেমোক্রেটিক পার্টি আর কোনো প্রার্থী বাছাই করেনি। তবে, নির্বাচনের চার মাস আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে ধরাশায়ী হওয়ার পর বাইডেন সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। সে সময় ডেমোক্রেটিক পার্টি তড়িঘড়ি করে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে।
ন্যান্সি পেলোসি সাক্ষাৎকারে কমলা হ্যারিসের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, কমলা হ্যারিস মানুষের মধ্যে আশা জাগিয়েছেন। প্রার্থী বাছাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে কমলা জিততেন। হয়তো কমলা আরও বেশি শক্তিশালী হতেন। জনগণের আরও কাছে যেতে পারতেন। ন্যান্সি পেলোসি আরও বলেছেন, জো বাইডেন কমলা হ্যারিসকে দ্রম্নত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ায় সে সময় প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া অসম্ভব হয়ে ওঠে। যদি সবকিছু আরও আগে ঘটত, তাহলে পরিস্থিতি আলাদা হতো। ন্যান্সি বলেন, প্রেসিডেন্ট যদি প্রচারণা না চালাতেন, তাহলে নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় ডেমোক্রেট প্রার্থীরা আরও ভালো করতে পারতেন।
বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্যনীতি ও ইসরায়েল তোষণের কারণে নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থীদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। মঙ্গলবারের নির্বাচনে হেরে হোয়াইট হাউস এবং কংগ্রেসের উভয় কক্ষের দখল হারানোর পর ন্যান্সির এই মন্তব্য বাইডেনকে বেকায়দায় ফেলেছে।
কমলার পরাজয় এবং দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হওয়া নিয়ে তিক্ত দোষারোপের খেলায় লিপ্ত হয়েছেন ডেমোক্রেটরা। ট্রাম্পকে ডেমোক্রেটরা অবাধে 'ফ্যাসিবাদী' বলে অভিহিত করেছিলেন। আর এমন সময় ন্যান্সি পেলোসির এ ধরনের মন্তব্য একটি বিস্ফোরকের মতো ফেটেছে।
ন্যান্সি বাইডেন প্রশাসনের আইনি কৃতিত্ব রক্ষায় প্রচুর পরিশ্রম করেছিলেন। সেগুলোর বেশিরভাগই হয়েছিল বাইডেন প্রশাসনের প্রথম দুই বছরে, যখন তিনি হাউস স্পিকার ছিলেন। বাইডেনকে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়াতেও রাজি করাতে ন্যান্সি পেলোসি মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে জানা গেছে। তবে তিনি প্রেসিডেন্টের আবেগে আঘাত করতে চাননি। আগস্টে 'নিউ ইয়র্কার'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ন্যান্সি বলেছিলেন, তিনি বাইডেনের 'রাজনৈতিক কার্যকলাপে এতটাও খুশি ছিলেন না।'