দশকের পর দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যে যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে, তার স্থায়ী সমাধান হতে পারে মাত্র একটি শর্ত বাস্তবায়ন করলে; সেটি হলো স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেছেন। কয়েক দিন আগে তুরস্কের 'দৈনিক হুরিয়েত'কে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ল্যাভরভ। শুক্রবার সেই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে পত্রিকাটি। তথ্যসূত্র : আরটি
সাক্ষাৎকারে মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক সংঘাত সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে ল্যাভরভ বলেন, 'গত বেশ কয়েক দশক ধরে সংঘাত চলছে মধ্যপ্রাচ্যে। সম্প্রতি আমরা দেখছি, ওই অঞ্চলে সহিংসতার মাত্রা দিন দিন বাড়ছে এবং একের পর এক দেশ এমন এক সংঘাতের ঘূর্ণাবর্তে ডুবে যাচ্ছে, যেখান থেকে কেউই জয়ী হয়ে ফিরতে পারবে না। অথচ মাত্র একটি শর্ত পূরণ হলেই সংঘাত-সহিংসতা বন্ধ হয়ে যাবে মধ্যপ্রাচ্যে; সেটি হলো স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্থাপন করা। এবং এই কাজটি করতে হবে ১৯৬৭ সালে দুই দেশের যে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছিল, তা যথাসম্ভব অক্ষুণ্ন রেখে।'
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের ইসরায়েলি ভূখন্ডে হামলার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক সংঘাতের শুরু। তারপর ওইদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী, যা এখনো চলছে। ইসরায়েলে হামাস যোদ্ধাদের হামলায় নিহত হয়েছিলেন প্রায় এক হাজার ২০০ জন, অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিজানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪৩ হাজার ২৫৯ জন ফিলিস্তিনি।
তবে এই যুদ্ধ শুধু গাজা উপত্যকাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি; লেবানন, ইরান ও সিরিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে। গত সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। একই সময়ে সিরিয়া এবং ইরানে সংক্ষিপ্ত বিমান অভিযান চালিয়েছে দেশটির বিমান বাহিনী। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুলস্নাহ আলি খামেনি এরই মধ্যে যে কোনো সময় ইসরায়েলে সামরিক হামলার হুমকি দিয়ে রেখেছেন।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান শুরুর এক সপ্তাহ পর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল রাশিয়া। পরিষদের অপর স্থায়ী সদস্য চীন সেই প্রস্তাবে সমর্থনও জানিয়েছিল। কিন্তু আমেরিকার আপত্তির কারণে সেটি গৃহীত হয়নি।