বড় বিস্ফোরণের শব্দ

ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

তিন সেনা নিহত, সীমিত ক্ষতির দাবি তেহরানের নিন্দা জানাল আরব দেশগুলো

প্রকাশ | ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ জানিয়েছে, তারা শুক্রবার গভীররাতে ইরানের 'সামরিক স্থাপনায় সুনির্দিষ্ট হামলা' চালিয়েছে। 'কয়েক মাস ধরে ইরানের ধারাবাহিক হামলার' জবাবে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। অন্যদিকে, হোয়াইট হাউস বলছে 'আত্মরক্ষার' অংশ হিসেবে ইরানে এই হামলা চালায় ইসরায়েল। তথ্যসূত্র : বিবিসি ইরানের 'এয়ার ডিফেন্স ফোর্স' এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তেহরান, খুজেস্তান ও ইলাম প্রদেশে কয়েকটি ঘাঁটিতে হামলা হয়েছে। এ হামলায় দুই সেনা নিহত হয়েছে। তবে ইরান বলেছে, এসব হামলা সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করা হয়েছে। তবে কিছু জায়গায় 'সীমিত ক্ষতি' হয়েছে। অন্যদিকে, আইডিএফ এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েলে নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণের জন্য ব্যবহৃত স্থাপনায় তারা হামলা চালিয়েছে। দেশটি বলেছে, হামলা শেষে তাদের বিমানগুলো নিরাপদে দেশে ফিরেছে। এ ছাড়া ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র প্রক্রিয়াসহ ইরানের আকাশ সক্ষমতাকে টার্গেট করে হামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের হামলার জবাব দেওয়া সম্পন্ন করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। তবে ইরান যদি পাল্টা হামলা চালায়, তবে এর কঠোর জবাব দেওয়া হবে। হ্যাগারির এ ঘোষণার আগে ইসরায়েলি হামলা প্রতিহত করার কথা জানায় ইরান। দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী ইসরায়েলি ড্রোনগুলো আকাশেই ধ্বংস করার দাবি করে। এ সংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজ অনলাইনে দেখা গেছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বলেছে তেহরানের দুই বিমান বন্দরের কার্যক্রম 'স্বাভাবিকভাবে'ই চলছে। যদিও ইরানের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন। তবে তারা বলেছেন, এই শব্দ 'ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম কার্যকর' করার কারণে হতে পারে। ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডের ঘনিষ্ঠ একটি বার্তা সংস্থা বলছে, তেহরানের পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে কিছু সামরিক ঘাঁটিকে টার্গেট করা হয়েছে। অন্যদিকে, সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা বলছে, দেশটির মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে কিছু সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর ইরান এবং ওই অঞ্চল জুড়ে তাদের ছায়া সহযোগীদের বিরামহীন হামলার জবাব দেওয়ার অধিকার বিশ্বের অন্য সব সার্বভৌম দেশের মতো ইসরায়েল রাষ্ট্রেরও আছে। ইসরায়েল রাষ্ট্র ও জনগণের সুরক্ষার জন্য যা করা দরকার তাই করা হবে। হোয়াইট হাউস বলেছে, আত্মরক্ষার অধিকারের অংশ হিসেবে ইসরায়েল ইরানে এ হামলা চালিয়েছে বলে তারা মনে করে। জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের এক মুখপাত্র বলেন, 'আমরা বুঝতে পারছি, ইসরায়েল ইরানের সামরিক স্থাপনায় অভিযান চালাচ্ছে। ১ অক্টোবর ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও আত্মরক্ষার অধিকার থেকেই তারা এটা করেছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে পুরো পরিস্থিতি 'অবহিত করা হয়েছে এবং তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন' বলে 'সিবিএস' জানিয়েছে। তবে শনিবারের এ হামলার সঙ্গে আমেরিকার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে পেন্টাগন জানিয়েছে। এদিকে, ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়েছে আরব দেশগুলো। সর্বপ্রথম সৌদি আরব নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলে, এ হামলা ইরানের অখন্ডতা এবং আন্তর্জাতিক আইনের ওপর আঘাত। এছাড়া দুই পক্ষকে সংযম বজায় এবং উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বানও জানায় দেশটি। সংযুক্ত আরব আমিরাতও ইসরায়েলের হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছে। যদিও তারা ইসরায়েলের নাম উচ্চারণ করেনি। মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ কাতার বলেছে, 'ইরানে হামলার তীব্র নিন্দা জানাই আমরা'