উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক থেকে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে বোমা হামলা চালিয়ে অন্তত সাতজন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। বেইত লাহিয়া থেকে পালিয়ে আসা ফিলিস্তিনিরা বলেছেন, তারা রাস্তায় মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন এবং ইসরায়েলি সৈন্যরা পুরুষদের আটক ও মারধর করছে। ওয়াফা নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে আল জাজিরা এ খবর দিয়েছে।
ওয়াফা নিউজ এজেন্সির অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার বিভিন্ন এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ২০টিরও বেশি হামলায় কয়েক ডজন নিহত ও আহতের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
উত্তর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী তাদের সপ্তাহব্যাপী হামলা অব্যাহত রেখেছে, বাড়িঘরে বোমা হামলা চালিয়েছে এবং খাবার, চিকিৎসা সরবরাহ এবং মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রবেশে বাধা দিয়ে বাসিন্দাদের জোরপূর্বক বাস্তুচু্যত করছে।
উত্তর গাজার জাবালিয়ার পশ্চিমে আস-সাফতাভিতে একটি বাড়ি লক্ষ্য করে ইসরায়েল বিমান হামলা করেছে। এতে অনির্দিষ্ট সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ইসরায়েল জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে বোমাবর্ষণ করে এবং গাজা শহরের আত-তোয়াম ও শেখ রাদওয়ান এলাকায় হামলা চালায়।
বাস্তুচু্যত লোকদের আশ্রয় দেওয়া বেইত লাহিয়ার জায়েদ বিন হারিথা স্কুলে ইসরায়েলি ট্যাঙ্কের গোলাবর্ষণে কমপক্ষে সাতজন নিহত হয়।
অপরদিকে লেবাননের বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে ইসরায়েল আক্রমণ করেছে। আল জাজিরার যাচাইকৃত একটি ফুটেজে ওই অঞ্চলে বিশাল বিস্ফোরণ এবং আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছে।
গাজায় গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪২ হাজার ৭১৮ জন নিহত এবং এক লাখ ২৮২ জন আহত হয়েছেন। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় ইসরায়েলে আনুমানিক ১১৩৯ জন নিহত হয় এবং ২০০ জনেরও বেশি লোককে জিম্মি করা হয়েছিল।
ইসরায়েলি সৈন্যরা আত্মহত্যা করছেন
এদিকে, গাজায় অসহায় মানুষের ওপর অমানবিক নির্যাতনকারী ইসরায়েলি সেনাদের মধ্যে কেউ সন্তানের বাবা, কেউ বৃদ্ধ মায়ের শেষ সম্বল, আবার কেউ বোনের আদরের একমাত্র ছোট ভাই। সেই মানুষগুলো যখন গাজায় নিরীহ নারী-শিশুদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে নিজ পরিবারের কাছে ফিরে আসছেন, তখন ভুগছেন মানসিক অবসাদে। গাজায় নেতানিয়াহুর নির্দেশ পালন করতে গিয়ে আহত হয়ে নিজ দেশে ফিরে যাওয়া অনেক আইডিএফ সদস্য আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়।
গাজায় যুদ্ধে অংশ নেওয়া ইসরাইয়েলি সৈন্যরা সিএনএনকে জানিয়েছেন, গাজার যে নৃশংসতা তারা দেখেছেন, তা বাইরের মানুষ কল্পনাও করতে পারবেন না।
প্রতিবেদন থেকে আরও জানা গেছে, আইডিএফের অনেক সেনা বর্তমানে মানসিক অবসাদে ভুগছেন। ফেরত আসা সৈন্যদের এখন অনেকেই মাংস খেতেও ভয় পান। মাংস খেতে গেলেই গাজায় রক্তাক্ত লাশের কথা মনে হয় তাদের। তারা রাতে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারেন না মানসিক অশান্তির কারণে।