ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ নিতে ইরানে বড় ধরনের পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে তেল আবিব। আর এ ক্ষেত্রে বাইডেন প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে ইরানে হামলা করতে বারণ করলেও গোপনে 'গ্রিন সিগন্যাল' (সবুজ সংকেত) দিয়ে রেখেছে। বাইডেনের গোপন অনুমতি পেয়ে গত ১৫-১৬ অক্টোবর থেকেই ইসরায়েলের বিমান ও নৌবাহিনী ইরানে হামলার প্রস্তুতি নিতে থাকে। এ সংক্রান্ত একটি গোপন নথি সম্প্রতি মার্কিন সেনা সদর দপ্তর পেন্টাগন থেকে ফাঁস হয়েছে। এরপর থেকেই এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। তথ্যসূত্র : আনাদলু, টাইমস অব ইসরায়েল
সোমবার ইসরায়েলের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল 'কান ১১'-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এক কর্মকর্তা বলেন, 'ইরানে একটি বড় হামলার প্রস্তুতি ইসরায়েল নিচ্ছে। এ ছাড়া ইরানের যে কোনো সম্ভাব্য হামলা ঠেকানোর জন্য (ইসরায়েলের) প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে।'
গত ১ অক্টোবর রাতজুড়ে ইসরায়েলে প্রায় ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরানের সেনাবাহিনী এলিট শাখা ইসলামি রেভলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)। হামলার দুই দিন পর ৩ অক্টোবর ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান কাতারে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বলেন, ইসরায়েল যদি গাজা এবং লেবাননে সামরিক অভিযান বন্ধ না করে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা আরও ঘটবে।
ইরানের হামলার পর আমেরিকাসহ অন্য মিত্রদের সঙ্গে নিজেদের সুরক্ষা ও মধ্যপ্রাচ্যের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নিবিড় আলোচনা শুরু করে ইসরায়েল। এ আলোচনার ভিত্তিতেই গত শনিবার ইসরায়েলে নিজেদের ক্ষেপণাস্ত্র সুরক্ষা বিষয়ক সমরাস্ত্র 'থাড' মোতায়েন করেছে আমেরিকা। উলেস্নখ্য, মার্কিন অস্ত্রাগারের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং অভিজাত সমরাস্ত্রগুলোর মধ্যে থাড অন্যতম।
ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যমগুলোয় প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের তেলক্ষেত্র বা পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। এদিকে, তেহরানও হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ইরানের ভূখন্ডে হামলা ঘটলে তার 'যন্ত্রণাদায়ক' পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে ইসরায়েলকে।
মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান এবং ইসরায়েল পরস্পরের প্রতি ব্যাপকমাত্রায় বৈরীভাবাপন্ন। হিজবুলস্নাহ, হামাস, হুতি, ইসলামিক জিহাদসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীকে গত চার দশক ধরে নিয়মিত আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে ইরান। এসব গোষ্ঠীর প্রধান এবং একমাত্র লক্ষ্য ইসরায়েলকে নির্মূল করা।