পাকিস্তানে বিচার বিভাগের ক্ষমতা সীমিত করল পার্লামেন্ট

পাকিস্তানের পার্লামেন্ট

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
.

পাকিস্তানের আদালতগুলোকে সংসদীয় বিষয়ে রায় দেওয়ার ক্ষমতা সীমিত করে একটি সাংবিধানিক সংশোধনী পাস করেছে দেশটির সরকার। সংশোধনীতে বলা হয়েছে, এখন থেকে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতিকে সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হবে এবং তার মেয়াদ তিন বছর নির্ধারিত থাকবে। এ ছাড়া নতুন একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠিত হবে। তথ্যসূত্র : এএফপি রোববার (২০ অক্টোবর) মধ্যরাতে শুরু হওয়া অধিবেশনে উত্থাপন করা হয়েছিল বহুল আলোচিত বিলটি। স্থানীয় সময় রাত ১১-৩৬ মিনিটে শুরু হওয়া অধিবেশনে তুমুল তর্ক-বিতর্কের পর অবশেষে সোমবার ভোর ৫টায় পাস হয় সংবিধান সংশোধনী বিল। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, এই সংশোধনীর লক্ষ্য হলো এমন বিচারিক রায়কে বাধা দেওয়া, যা সংসদীয় কর্মকান্ডে হস্তক্ষেপ করে। সবাই একমত যে, পার্লামেন্টের প্রাধান্য নিয়ে কোনো আপস করা হবে না। বিলটি পাস হতে পার্লামেন্টে ২২৪ ভোট প্রয়োজন ছিল। শেষ পর্যন্ত ২২৫ ভোটে পাস হয় বিলটি। এদিন সংবিধান সংশোধনের পক্ষে ভোট দেয় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এবং তাদের মিত্র পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। বিরোধী নেতা ইমরান খানের মিত্র হিসেবে পরিচিত একটি ধর্মীয় দলের সমর্থনও পায় সরকার। তবে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সংশোধনীর বিরোধিতা করে। পিটিআই নেতা ও পার্লামেন্টে বিরোধী দলের প্রধান ওমর আইয়ুব খান এই সংশোধনীকে 'স্বাধীন বিচারব্যবস্থার শ্বাসরোধ' হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, এটি পাকিস্তানের জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন নয়। বিশ্লেষক বিলাল গিলানির মতে বলেন, এই সংশোধনী কিছু ক্ষেত্রে ভারসাম্য তৈরি করবে, বিশেষ করে, বিচার বিভাগের অতিরিক্ত সক্রিয়তার বিপক্ষে। তবে তিনি সতর্ক করেন, সংশোধনীর একটি খারাপ দিক হলো- এটি এমন একটি বিচারব্যবস্থা তৈরি করতে পারে, যা সরকারের ইচ্ছার প্রতি বেশি নমনীয়। এই সংশোধনী পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও বিচারিক ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে বিচার বিভাগ সরকারের ওপর কীভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবে, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। এই সংশোধনীটি এমন এক সময় এসেছে যখন পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি কাজি ফায়েজ ইসার অবসর নিতে যাচ্ছেন। পুরনো নিয়ম অনুযায়ী, তার জায়গায় বসতেন সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মনসুর আলি শাহ, যিনি ইমরান খানের পক্ষে বেশ কয়েকটি রায় দিয়েছেন বলে মনে করা হয়।