নিষেধাজ্ঞায়ও শক্তিশালী ইরান

ইরানের সামরিক বাহিনীর ইতিহাস আড়াই হাজার বছরের পুরনো। তবে আধুনিক সেনাবাহিনী বা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হওয়ার শুরুটা হয়েছিল রেজা খান বা রেজা শাহ পাহলভির হাত ধরে। তিনি ১৯২০-এর দশকে সেনা কমান্ডার থেকে পরে প্রধানমন্ত্রী ও রাজা হয়েছিলেন। সামরিক বাহিনীর কমান্ডার হওয়ার পর তিনি 'আরতেশ বাহিনী' গঠন করেন, যেটাকে আধুনিক এক সশস্ত্র বাহিনীর সূচনা হিসেবে দেখা হয়। তিনি ইরানকে একটি আঞ্চলিক শক্তিতে রূপান্তর করতে চেয়েছিলেন। এজন্য তিনি হাজারও অফিসারকে বিদেশে মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে পাঠিয়েছিলেন, পাশাপাশি নিজ দেশের বাহিনীকে বড় করতে থাকেন এবং তাদের প্রশিক্ষণ দিতে পশ্চিমা অফিসারও নিয়োগ দেন... ইরান যদি একবার কিছু একটা দেখার সুযোগ পায় এবং মনে করে- তাদের জন্য এটা ভালো হতে পারে, তাহলে সেটা তারা বানিয়ে ফেলতে পারে। কয়েক বছর আগে আমেরিকার ড্রোন ভূপাতিত করার পর তারা ড্রোন বানাতে থাকে এবং এখন ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি তাদের প্রতিরক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ড্রোন...

প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বহু ধরনের ড্রোন রয়েছে ইরানের হাতে
মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি ক্রমাগত ভয়াবহ অবনতির দিকে যাচ্ছে। সম্প্রতি ইসরায়েলে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। একে ইসরায়েলের অপরাধের 'নূ্যনতম শাস্তি' বলে উলেস্নখ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুলস্নাহ আলি খামেনি। এই হামলার কৌশলগত দিক বিশ্লেষণ করে আমেরিকার 'ইন্সটিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার' বলছে, এত বেশি সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র এমনভাবে ছোড়া হয়েছে, যা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে চাপে ফেলেছে। ইসরায়েলি বাহিনী সবার আগে ঘনবসতি এলাকায় হামলা ঠেকাতে চেয়েছে এবং তুলনামূলক কম ঘনবসতি এলাকা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এজন্য বেশ কয়েকটি বিমানঘাঁটি; যেগুলো তুলনামূলক কম ঘনবসতি এলাকায়, সেগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারেনি ইসরায়েল। তেল আবিবের কাছে গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দপ্তরের কাছেও আঘাত করতে সক্ষম হয়েছে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র। তেহরান এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জুলাই মাসে তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা এবং বৈরুতে হিজবুলস্নাহর শীর্ষ নেতাকে হত্যার জবাব দিতে এই হামলা চালিয়েছে তারা। আগে থেকেই ইসরায়েল বা আমেরিকার জন্য একটা বড় মাথাব্যথার জায়গা ছিল ইরান। লেবাননের হিজবুলস্নাহ, ইয়েমেনের হুতি অথবা সিরিয়া ও ইরাকের বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর অস্ত্রশস্ত্রের পেছনে ইরানের সম্পৃক্ততার কথা এসেছে বারবার। ইরানের সশস্ত্র বাহিনী বা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পশ্চিমাদের উদ্বেগ ছিল অনেক আগে থেকেই। আয়রন ডোমসহ শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকলেও ইরানের হামলা পুরোপুরি ঠেকাতে পারেনি ইসরায়েল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বহু ধরনের নিষেধাজ্ঞায় থাকা ইরান কীভাবে অস্ত্র পাচ্ছে বা তৈরি করছে, তাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইরানের বর্তমান অস্ত্রের সক্ষমতার পেছনে যেসব বিষয় কাজ করেছে, সেটা জানতে একটু পেছন থেকে শুরু করতে হবে। ইরানের সামরিক বাহিনীর ইতিহাস আড়াই হাজার বছরের পুরনো। তবে আধুনিক সেনাবাহিনী বা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হওয়ার শুরুটা হয়েছিল রেজা খান বা রেজা শাহ পাহলভির হাত ধরে। তিনি ১৯২০-এর দশকে সেনা কমান্ডার থেকে পরে প্রধানমন্ত্রী ও রাজা হয়েছিলেন। সামরিক বাহিনীর কমান্ডার হওয়ার পর তিনি 'আরতেশ বাহিনী' গঠন করেন, যেটাকে আধুনিক এক সশস্ত্র বাহিনীর সূচনা হিসেবে দেখা হয়। তিনি ইরানকে একটি আঞ্চলিক শক্তিতে রূপান্তর করতে চেয়েছিলেন। এজন্য তিনি হাজারও অফিসারকে বিদেশে মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে পাঠিয়েছিলেন, পাশাপাশি নিজ দেশের বাহিনীকে বড় করতে থাকেন এবং তাদের প্রশিক্ষণ দিতে পশ্চিমা অফিসারও নিয়োগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ ও সোভিয়েত ইউনিয়ন ইরানের দখল নেয়। নাৎসি জার্মানির সঙ্গে সুসম্পর্কের জেরে রেজা শাহকে সরিয়ে রাজার আসনে আনা হয় তার ছেলে মোহাম্মদ রেজা পাহলভিকে, যিনি শাসনকালের প্রায় পুরোটা সময় পশ্চিমাপন্থি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পশ্চিমাদের নজর ছিল ইরানের তেলের দিকে। তেলের টাকায় ৬০ থেকে ৭০ দশকজুড়ে মূলত আমেরিকা থেকে বহু আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র কেনা হয়। মোহাম্মদ রেজা পাহলভি দেশকে আধুনিকায়ন করতে উদ্যোগ নিলেও জনবিচ্ছিন্নতা, একনায়কতন্ত্র এমন নানা প্রেক্ষাপটে বিপস্নবের সূচনা হয়। দাঙ্গা, ধর্মঘট আর বিক্ষোভের বাস্তবতায় দেশ ছেড়ে পালাতে হয় শাহ ও তার পরিবারকে। তবে তার অস্ত্র কেনা, সামরিক প্রশিক্ষণ, এমন নানা পদক্ষেপের কারণে ১৯৭৯ সালে বিপস্নবের সময় ইরানের বাহিনী ছিল ওই অঞ্চলের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর একটি। ইরানের সামরিক শক্তির ইতিহাস ও সক্ষমতার বিস্তারিত উলেস্নখ করা হয়েছে আমেরিকার ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির প্রতিবেদনে। ইসলামি বিপস্নবের সঙ্গে আয়াতুলস্নাহ রুহুলস্নাহ খোমেনির প্রত্যাবর্তন বা উত্থানেও সমস্যা ছিল না, সমস্যা বাধে কয়েক মাসের মাথায় যখন তার অনুগত একদল শিক্ষার্থী তেহরানে মার্কিন দূতাবাসের দখল নিয়ে ৫২ জন আমেরিকানকে জিম্মি করে। তাদের দাবি ছিল, দেশান্তরী শাহকে বিচারের জন্য তেহরানে আনা। ৪৪৪ দিন স্থায়ী হওয়া এই সংকটের জেরে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে আমেরিকা। ইরান সে সময় অনেকটা একঘরে এবং সামরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। সেটাকেই 'প্রথম অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা' বলা যায়, যার জেরে তখন পর্যন্ত বাকি থাকা অস্ত্রের সরবরাহ আর পায়নি ইরান। শাহ পাহলভির রেখে যাওয়া সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি ইসলামিক রেভলিউশন গার্ড কর্পস বা বিপস্নবী বাহিনী গড়ে তোলা হয় আয়াতুলস্নাহ রুহুলস্নাহ খোমেনির নেতৃত্বে। ১৯৮০ সালে ইরানে হামলা চালায় ইরাক। প্রাথমিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লেও ধীরে ধীরে পেশাদারিত্ব বাড়তে থাকে নব্যগঠিত বিপস্নবী গার্ডের। ১৯৮২ সালে সাদ্দাম হোসেনের বাহিনীকে হটিয়ে পাল্টা হামলা করে ইরান। সামরিক ও ইরান বিষয়ক বিশ্লেষক এবং কানাডার 'রয়্যাল মিলিটারি কলেজে'র একজন এমিরেটাস অধ্যাপক ড. হুশ্যাং হাসান ইয়ারি বলেন, প্রথমদিকে আগেরকার মার্কিন অস্ত্র দিয়ে মোকাবিলা করলেও যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকলে এক পর্যায়ে জোড়াতালি দেওয়া শুরু করতে হয়। যেমন একটি ফাইটার এফ-ফোরটিনের যন্ত্রাংশ আরেকটায় লাগিয়ে কাজ চালাতে হয়েছিল। লিবিয়া থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি স্কাড ক্ষেপণাস্ত্র ও যন্ত্রাংশ এনে রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং করে কীভাবে বানানো হয়েছে, সেটা দেখে নিজেরা বানানোর চেষ্টা করেছিল ইরান। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিগ্যানও গোপনে কিছু অস্ত্র বিক্রি করেন, যা 'কন্ট্রা স্ক্যান্ডাল' নামে পরিচিত। উত্তর কোরিয়া থেকেও ক্ষেপণাস্ত্র নেওয়া হয়। ধীরে ধীরে এগুলোর সঙ্গে নানা গবেষণা চালিয়ে প্রয়োজন মেটাতে থাকে এবং তারা অবৈধভাবে বাইরে থেকে অস্ত্র আনার একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় ঢুকে যায়। ১৯৮৮ সালে যথেষ্ট সমর্থন এবং রসদের অভাবে যুদ্ধবিরতিতে যেতে বাধ্য হলেও যুদ্ধের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ে ইরানের সামরিক বাহিনী ও নিরাপত্তা নীতিতে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা, যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি, সব মিলিয়ে পরবর্তী দশকগুলোয় স্বনির্ভরতা ও যুদ্ধের সক্ষমতা বাড়াতে উদ্বুদ্ধ হয় ইরান। বিপস্নব এবং ইরান-ইরাক যুদ্ধের পর ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসে। বিশেষ করে ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়ে বেশি জোর দেওয়া হয় এবং এজন্য উত্তর কোরিয়া, চীনা এবং রাশিয়ানদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিতে থাকে এবং নিজেরাই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে থাকে ইরান। ৯০-এর দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে শিয়া গোষ্ঠী আর বিভিন্ন দিকে সম্ভাব্য মিত্রদের সঙ্গে নেটওয়ার্ক শক্ত করতে থাকে ইরান। চার দশকের বেশি সময় ধরে বহু ধরনের নিষেধাজ্ঞা আসে দেশটির ওপর। শুধু জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ইরান সংশ্লিষ্ট ছয় শতাধিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আমেরিকা। বর্তমান সক্ষমতা এবং এর উৎস ইসরায়েলের এবারের হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে প্রায় ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যেটি অনেক কম সময়ে আঘাত হানতে পারে। মার্কিন কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, এগুলো ঠেকানো কিছুটা কঠিন, কারণ এর গতি। এপ্রিল মাসে ইসরায়েলে ইরান যে হামলা করেছিল, সে তুলনায় এটি একটি বড় পার্থক্যের জায়গা। আগেকার হামলায় ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোনের মতো অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। যেখানে ড্রোন ইসরায়েলে পৌঁছাতে ৬-৭ ঘণ্টা সময় নেয়, সে তুলনায় এবারকার হামলায় হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের দাবি করেছে ইরান, যেটা ইসরায়েলে পৌঁছাতে গড়পড়তা ১০ মিনিটের মতো সময় লাগে। প্রায় দুই হাজার কিলোমিটারের মতো দূরত্ব এত কম সময়ে পাড়ি দেওয়ায় আগের তুলনায় বেশি আঘাত হানতে পেরেছে। শুধু ক্ষেপণাস্ত্রের দিকে দেখলেও ইরানের স্বল্প ও দূরপালস্নার বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। যেমন 'শাহাব-৩' দুই হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত পাড়ি দিতে সক্ষম। অর্থাৎ ইসরায়েল পার করে মিসর, অন্যদিকে ইউরোপ, রাশিয়া, ভারত বা চীন পর্যন্তও যেতে পারে এসব ক্ষেপণাস্ত্র। ইরানের অস্ত্র সরঞ্জামের বড় জোগানদাতা রাশিয়া হলেও ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকেই নিজেদের তৈরি ড্রোন দিয়েছে ইরান। অনেকে বলেন, ইরান যদি একবার কিছু একটা দেখার সুযোগ পায় এবং মনে করে- তাদের জন্য এটা ভালো হতে পারে, তাহলে সেটা তারা বানিয়ে ফেলতে পারে। কয়েক বছর আগে আমেরিকার ড্রোন ভূপাতিত করার পর তারা ড্রোন বানাতে থাকে এবং এখন ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি তাদের প্রতিরক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ড্রোন। তবে ইরানের আধা-সরকারি সংবাদমাধ্যম 'আইএসএনএ'র এপ্রিল মাসের একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা 'রয়টার্স' আরও বেশকিছু দূরপালস্নার ক্ষেপণাস্ত্রের তথ্য উলেস্নখ করেছে। যেমন 'হাজ কাসেম' ১৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে, খেইবার ২০০০ কিলোমিটার এবং সেজিল ২৫০০ কিলোমিটার, যেটি ঘণ্টায় ১৭ হাজার কিলোমিটারের বেশি গতিতে ছুটতে সক্ষম। মধ্যপ্রাচ্যে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সক্ষমতা ইরানের সবচেয়ে বেশি বলে উলেস্নখ করেছে আমেরিকা। বহু ধরনের মিসাইল বা ক্ষেপণাস্ত্রের বহর ছাড়াও অনেক ধরনের অস্ত্রসম্ভার রয়েছে ইরানের। সেনাবাহিনীর রয়েছে অনেক ধরনের বন্দুক, ট্যাংক, সাজোঁয়া যান, রকেট লঞ্চারের মতো অস্ত্র। নৌ-বাহিনীর রয়েছে অনেক ধরনের ছোট-বড় রণতরী, নেভাল মাইন বা বিস্ফোরক, ডুবোজাহাজ, হেলিকপ্টারবাহী তরী এবং টহল জাহাজ। বিমান বাহিনীর আছে হেলিকপ্টার, যুদ্ধবিমান ও বহু ধরনের ড্রোন। সাইবার শক্তিও যথেষ্ট উন্নত করেছে ইরান। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ করার দিক তো ছিলই, যেটা নিয়ে সম্প্রতি জো বাইডেনও জানিয়েছেন ইরানে কোনো পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা তিনি সমর্থন করেন না। নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর বহরকে তুলনামূলক পুরনো ধাঁচের বা কম সক্ষম হিসেবে দেখা হলেও ১ অক্টোবরের হামলা থেকে বোঝা যাচ্ছে, তাদের হামলা এবং আঘাত করতে পারার যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে। তবে প্রশ্ন আসে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পরও কীভাবে এই সক্ষমতা তৈরি করল ইরান? ধারণা করা হয়, নিজস্ব অস্ত্র সমৃদ্ধ করতে ইরান বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। পশ্চিমা দেশগুলো থেকে যন্ত্রাংশ চোরাচালান করে নিয়ে আসা হয়। এ ছাড়া রাশিয়া তো আছেই, চীন ও উত্তর কোরিয়ার ওপরও কিছুটা নির্ভর করে তারা। ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থানও রয়েছে, যেটা এশিয়ার সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য, পারস্য উপসাগর এবং ইউরোপের সংযোগ তৈরি করে। অনেক ইরানি বিশ্লেষক মনে করেন, নিষেধাজ্ঞায় জনগণের ওপর বড় ধাক্কা এলেও সেসব নিষেধাজ্ঞাই ইরানকে স্বনির্ভর হতে, নিজেদের উন্নতিতে বিকল্প পথ তৈরি করতে সাহায্য করেছে। তথ্যসূত্র : বিবিসি নিউজ