অভিযোগ রাশিয়ার

গাজাবাসীকে সুরক্ষায় ব্যর্থ জাতিসংঘ

প্রায় প্রতিদিনই শিশুদের মাথায় গুলি করার মতো গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে,াজা যুদ্ধবিরতি আলোচনার কোনো অগ্রগতি হয়নি : কাতার

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে জাতিসংঘ। শুধুমাত্র তাই নয়, জাতিসংঘের পতাকাকেও এখন লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। তথ্যসূত্র : তাস, রয়টার্স, আনাদোলু রাশিয়ার কূটনীতিক নেবেনজিয়া বুধবার বলেন, গাজায় জাতিসংঘের স্কুল, হাসপাতাল এবং শরণার্থী শিবিরগুলোতেও অবিরাম গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে। গাজার হাসপাতালে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবী ডাক্তারদের উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যম বলছে, প্রায় প্রতিদিনই শিশুদের মাথায় গুলি করার মতো গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। দুই থেকে ১২ বছরের শিশুদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করছে ইসরায়েল। তিনি ফিলিস্তিনসহ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভায় এসব কথা বলেছেন। জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার এই কূটনীতিক জোর দিয়ে বলেন, এসব ঘটনা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয়, গাজায় জাতিসংঘের পতাকা শুধু বেসামরিক নাগরিক, মানবাধিকার কর্মী এবং বেসামরিক অবকাঠামো রক্ষা করতেই ব্যর্থ হচ্ছে না, বরং আন্তর্জাতিক সংস্থাটি নিজেই আইডিএফের সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। জাতিসংঘের ত্রাণ অফিস এবং ত্রাণকর্মীদের ওপর গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় এখন আর কোনো নিরাপদ স্থান বাকি নেই। এটি একটি তিক্ত বাস্তবতা। ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, নারী ও শিশুসহ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে, অথচ পশ্চিমারা এখন মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে। তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬৫ ফিলিস্তিনিকে হত্যা এবং ৩২৯ জনের বেশি বেসামরিক লোককে আহত করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা নিয়ে যুদ্ধবিরতি আলোচনার কোনো অগ্রগতি হয়নি : কাতার গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত করতে শেষ তিন থেকে চার সপ্তাহ কোনো আলোচনাই হয়নি। কোনো পক্ষই সমঝোতার জন্য এগিয়ে আসেনি। বুধবার (১৬ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও গাল্ফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ব্রাসেলসে উপস্থিত হন থানি। সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'আলোচনার সম্ভাবনা (গাজা যুদ্ধবিরতি বিষয়ে) নিয়ে যদি বলি, মূলত গত তিন থেকে চার সপ্তাহে কোনো বৈঠক হয়নি। কারও দিক থেকে তেমন আগ্রহও দেখা যায়নি। সব পক্ষই যেন মৌনব্রত পালন করছে। আর আমরা চক্রাকারে একই পথে ঘুরছি।' ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে মধ্যস্থতা প্রচেষ্টার নেতৃত্বে আছেন শেখ মোহাম্মদ আল-থানি। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অবিলম্বে একটি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব রাখা হয়। তা সত্ত্বেও গত বছর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় নৃশংস হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে প্রায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করে হামাস। এ সময় প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের মধ্যে এখনো শ'খানেক মানুষকে গাজায় আটকে রাখা হয়েছে বলে ইসরায়েলের ধারণা। এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।