যুক্তরাষ্ট্রে হারিকেন হেলেন আঘাত হানার কয়েক সপ্তাহ পর এখনো নর্থ ক্যারোলাইনায় ৯২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। হেলেনে লন্ডভন্ড হওয়া অঙ্গরাজ্যটির গর্ভনর রয় কুপার মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন। এদিন এক সংবাদ সম্মেলনে কুপার জানান, নিখোঁজ অনেকের সন্ধান পাওয়ার পর সংখ্যাটি কমে এসেছে আর বর্তমান সংখ্যাও পরিবর্তিত হতে পারে।
তিনি বলেন, 'আমি সতর্ক করে বলতে চাই, এটিই চূড়ান্ত সংখ্যা নয়, কারণ টাস্ক ফোর্স তাদের অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে।'
বিবিসি জানিয়েছে, হারিকেন হেলেনে নর্থ ক্যারোলাইনায় ৯৫ জনের মৃতু্যর কথা জানা গেছে আর ফ্লোরিডাসহ মোট মৃতু্য হয়েছে অন্তত ২২০ জনের। ২৭ সেপ্টেম্বর ফ্লোরিডার উপকূল দিয়েই হারিকেনটি স্থলে উঠে এসেছিল। হারিকেনটি নিয়ে ধারাবাহিকভাবে 'ভুল তথ্য প্রচারিত' হতে থাকায় ত্রাণ প্রচেষ্টা জটিল হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুপার যারাই এ ধরনের ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে তাদের 'থামার' জন্য সতর্ক করেছেন তিনি। বলেছেন, এসব ভুল তথ্য নর্থ ক্যারোলাইনার ক্ষতিগ্রস্ত পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দাদের আরও ক্ষতি করছে।
হারিকেন হেলেনকে ঘিরে অনেকগুলো মিথ্যা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়ার পর ওই অঞ্চলের স্থানীয় অনেক বাসিন্দা ফেডারেল কর্মীদের অবিশ্বাস করছেন, এতে ত্রাণ কাজ করতে গিয়ে তারা বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (ফেমা) জানিয়েছে, মিথ্যা তথ্যের হুমকির কারণে নর্থ ক্যারোলাইন পশ্চিমাঞ্চলের একটি কাউন্টি থেকে কিছু সময়ের জন্য তাদের সব কর্মীদের সরিয়ে নিতে হয়েছিল, এসব কারণে অঙ্গরাজ্যটিতে তাদের কার্যক্রমে পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছে তারা।
গত শনিবার রাদারফোর্ড কাউন্টি থেকে পুলিশ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। সে প্রকাশ্যে ত্রাণকর্মীদের ক্ষতি করার বিষয়ে কথা বলছিল এবং তার কাছে একটি রাইফেল ও একটি পিস্তল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিবিসি বলছে, যেসব মিথ্যা ষড়যন্ত্র তথ্য ছড়ানো হয়েছে, এর অনেকগুলোই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এগুলোর কোনোটি জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত, কোনোটি ত্রাণের অর্থ-সংক্রান্ত আর বাকিগুলো 'ইচ্ছাকৃতভাবে আবহাওয়ার হেরফের' ঘটানো হয়েছে এমন অভিযোগ। অনলাইনে এগুলোর সবই দ্রম্নত ছড়িয়েছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও গুজবকে পুঁজি করার জন্য ওই অঞ্চলে সক্রিয় বেশ কয়েকটি চরমপন্থি গোষ্ঠী এসব গুজব ছড়িয়েছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
হারিকেন হেলেনের তান্ডবে নর্থ ক্যারোলাইনার পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি শহর ধ্বংস হয়ে গেছে। হেলেনের প্রভাবে ওই অঞ্চলে কয়েক দিনের মধ্যে ছয় মাসের সমপরিমাণ বৃষ্টি হয়।
অঞ্চলটি পর্বতময় ও বন্ধুর এলাকা হওয়ায়, সেখানে উদ্ধার প্রচেষ্টা চালানো জটিল ছিল। সেখানে অনেক ঘরবাড়ি ও সেতু পানিতে ভেসে গেছে আর জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য আশভিল শহর বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।