আজকের যায়যায়দিন

ইরানের ওপর পরিকল্পিত প্রতিশোধমূলক হামলায় পারমাণবিক বা তেল স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করবে না বলে আমেরিকাকে 'নিশ্চয়তা' দিয়েছে ইসরায়েল। ১ অক্টোবর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর ইসরায়েল ইরানের ওপর পাল্টা আক্রমণের ঘোষণা দিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ইরানের তেল স্থাপনা ও পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল। তথ্যসূত্র : আনাদোলু

প্রতিশোধের এই হামলায় ইসরায়েল ইরানি পারমাণবিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা করবে কিনা, তা নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। তবে পরমাণু স্থাপনা নয়, ইরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েল হামলা করবে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এ বিষয়ে আমেরিকাকে এরই মধ্যেই 'আশ্বস্ত' করেছেন তিনি। ইরানের পারমাণবিক ও তেল স্থাপনায় হামলার বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করে দেওয়ার পর নেতানিয়াহুর পক্ষ থেকে এই নিশ্চয়তা সামনে এলো।

প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম 'ওয়াশিংটন পোস্টে'র প্রতিবেদন অনুসারে, নেতানিয়াহু গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে ফোনকলে কথা বলার সময় ইরানের সামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে আমেরিকার এক কর্মকর্তাসহ দুইজন অজ্ঞাত কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

দুই সপ্তাহ আগে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি এরই মধ্যে দিয়েছে ইসরায়েল। তেহরান বলেছে, গত জুলাইয়ে তেহরানে হামাসের সাবেক রাজনৈতিক নেতাকে হত্যার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এবং গত মাসে বৈরুতে হিজবুলস্নাহর নেতা হাসান নাসরুলস্নাহকে হত্যার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েলে এই হামলা চালানো হয়েছে।

চলতি বছরের ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে ইসরায়েলি বোমা হামলায় ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর তেল আবিব এবং তেহরানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। ইরান সেই হামলার জবাবে ইসরায়েলে শতাধিক ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। প্রায় সবই ইসরায়েল, আমেরিকা এবং তার আঞ্চলিক মিত্রদের মাধ্যমে আটকানো সম্ভব হয়েছিল।

একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ইরানে হামলা এমনভাবে করা হবে, যা আসন্ন মার্কিন নির্বাচনের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সম্মত হয়েছেন। কারণ, তেল স্থাপনার ওপর আক্রমণ তেলের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে তেল কিনতে বেশি অর্থ খরচ করতে হতে পারে মার্কিনিদের। আর এতে করে মার্কিন ভোটাররা অসন্তুষ্ট হতে পারেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ভোটের মাঠে ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। ওই কর্মকর্তার মতে, আগামী ৫ নভেম্বর আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং ইসরায়েল দুর্বল, এমন ধারণা এড়াতে ইরানে ইসরায়েলের পাল্টা আঘাত এর আগেই হবে।

এদিকে, মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে আলোচনার সময় তুলনামূলক 'অধিক সংযত' ছিলেন নেতানিয়াহু। আর এটিই ইসরায়েলে 'থাড' আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও সেটি পরিচালনার জন্য ১০০ মার্কিন সেনা পাঠানোর বিষয়ে বাইডেনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন রোববার থাড মোতায়েনের কথা ঘোষণা করে বলেছে, এটি ইসরায়েলের সমন্বিত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। একই সঙ্গে এটি ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি ওয়াশিংটনের 'লোহার আবরণের মতো' দৃঢ় প্রতিশ্রম্নতির প্রতিফলন।

পেন্টাগনের মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট রাইডার বলেছেন, 'ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাকে সহায়তা করতে এবং ইরান ও ইরান-সংশ্লিষ্ট মিলিশিয়াদের আক্রমণ থেকে আমেরিকানদের রক্ষা করার জন্য সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মার্কিন সামরিক বাহিনী যে বিস্তৃত কর্মকান্ড সমন্বয় করেছে, এটি তারই একটি অংশ।'