জম্মু-কাশ্মীর
রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার, নতুন সরকার গঠনের পথে ওমর
মোদি সরকারের কাছে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের দাবি করা বোকামি
প্রকাশ | ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ছয় বছরেরও বেশি সময় পরে রাষ্ট্রপতি শাসনের অবসান হলো ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে। সেখানে এবার গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করা হবে। রোববার (১৩ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি গেজেট নির্দেশিকা জারি করে জম্মু-কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতির শাসন অবসানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি সপ্তাহের শেষেই জম্মু-কাশ্মীরে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) নেতা ওমর আবদুলস্নাহ। মূলত সেই কারণেই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিতে রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার করার কথা জানাল কেন্দ্র। তথ্যসূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
জম্মু-কাশ্মীরে ১০ বছর পর সম্প্রতি বিধানসভা নির্বাচন হয়। সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন রয়েছে এনসি-কংগ্রেস জোট। এনসি বিধায়করা সর্বসম্মতিক্রমে পরিষদীয় দলের নেতা হিসেবে ওমর আবদুলস্নাহকে নির্বাচিত করেছেন। এরপর শুক্রবার (১১ অক্টোবর) নিজের দলের ৪২ জন বিধায়ক, ছয় কংগ্রেস বিধায়ক, এক সিপিএম, এক আপ এবং কয়েকজন স্বতন্ত্র বিধায়কের স্বাক্ষর-সংবলিত চিঠি নিয়ে উপ-রাজ্যপাল মনোজ সিনহার সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের দাবি জানান ওমর আবদুলস্নাহ।
এবারের নির্বাচনে ৯০ সদস্যবিশিষ্ট জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় কংগ্রেস এবং ন্যাশনাল কনফারেন্সের জোট ৪৮টি আসনে জিতেছে। এর মধ্যে ৪২টি আসনে জয়ী ন্যাশনাল কনফারেন্স, কংগ্রেস জয়ী ছয়টিতে। আর পিডিপি জয়ী মাত্র তিনটি আসনে। বিজেপি জিতেছে ২৯টি আসনে। এদিকে, সিপিএম একটি আসনে জিতেছে জম্মু-কাশ্মীরে। আম আদমি পার্টিও (আপ) জয়ী একটি আসনে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর জম্মু-কাশ্মীরে পিডিপির সঙ্গে মিলে সরকার গঠন করেছিল বিজেপি। তবে সেই সরকারের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই ২০১৭ সালে বিজেপি পিডিপি সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেয় এবং মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন মেহবুবা মুফতি। সেই সময় থেকেই রাষ্ট্রপতি শাসন জারি ছিল জম্মু-কাশ্মীরে।
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে বিজেপি সরকার। এমনকি জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদাও কেড়ে নেয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার। জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে (জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখে) ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল।
এবারের নির্বাচনে জেতার পরই ওমর আবদুলস্নাহ স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রের এই মোদি সরকারের কাছে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের দাবি জানানো বোকামি। ওমর বলেছিলেন, 'আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান বদলাবে না। আমরা কখনইও বলিনি, ৩৭০ ধারার বিষয়ে আমরা নীরব থাকব বা এটি আমাদের জন্য আর কোনো ইসু্য নয়। কিন্তু আমরা জনগণকে বোকা বানানোর জন্য প্রস্তুত নই। আমি সবসময় বলেছি, যারা এই ৩৭০ ধারা বাতিল করেছে, সেই লোকদের কাছ থেকে এটি ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা করা বোকামি। এটা মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার মতো। তবে আমরা এই ইসু্যটিকে বাঁচিয়ে রাখব... আমরা আশা করি, একদিন সরকার পরিবর্তন হবে।
\হপ্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন হবে এবং এমন একটি সরকার হবে, যার সঙ্গে আমরা এ বিষয়ে কথা বলতে পারব এবং জম্মু-কাশ্মীরের জন্য কিছু অর্জন করতে পারব।'