ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে ইসরায়েলি হামলায় রোববার কমপক্ষে আরও ২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। ইসরায়েল মধ্য গাজার একটি স্কুলে হামলা চালালে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার স্কুলটিতে ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছিলেন। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বলছে, মধ্য গাজার নুসেইরাতে বাস্তুচু্যত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত একটি স্কুলে ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলাবর্ষণে ২২ জনের মৃতু্য নিশ্চিত করা হয়েছে এবং আরও ৮০ জন আহত হয়েছেন। গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি বলেছে, নুসেইরাত ক্যাম্পের এই স্কুলটিতে রোববার ব্যাপক আর্টিলারি হামলা চালানো হয়। বর্বর এই হামলায় অনেক পুরো পরিবার নিহত হয়েছেন এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) বলছে, তারা এই প্রতিবেদনগুলো খতিয়ে দেখছে।
এর আগে গাজার উত্তরাঞ্চলে রাস্তার মোড়ে খেলার সময় ড্রোন হামলায় পাঁচ শিশু নিহত হয় বলে জানা গেছে। অভিযোগ এসেছে, উত্তর গাজায় ড্রোন দিয়ে ফিলিস্তিনি শিশুদের ওপর হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের 'ওয়াফা' বার্তা সংস্থা রোববার এ তথ্য জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, একটি ইসরায়েলি ড্রোন শাতি শরণার্থী শিবিরের একটি ক্যাফের কাছে খেলতে থাকা শিশুদের ওপর গুলি ছোড়ে। হামলায় বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন। গাজার সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, আল-ফালুজা এলাকায় পৃথক হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি বাহিনী গত ১০ দিন ধরে উত্তর গাজায় নতুন করে আক্রমণ করছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, প্রায় চার লাখ মানুষ উত্তর গাজায় আটকা পড়েছেন। কারণ বাসিন্দারা দক্ষিণ দিকে পালানোর চেষ্টা করলে তাদের ওপর গুলি করা হচ্ছে। এমনকি নিরাপদ এলাকা না থাকায় যারা দক্ষিণে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪২ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৯৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারের বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।