বাসিন্দাদের দক্ষিণে যাওয়ার নির্দেশ

গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২২

'হামলার সময় মনে হয়েছে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে'

প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
জাবালিয়া থেকে দক্ষিণ দিকে পালাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা
ফিলিস্তিনের উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে এই হামলা চালিয়েছে তারা। এতে গত এক বছরে উপত্যকায় মোট নিহতের সংখ্যা ৪২ হাজার ১২৬ জনে এবং আহতের সংখ্যা ৯৮ হাজার ১১৭ জনে পৌঁছেছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় শনিবার জাবালিয়ার কাছাকাছি এলাকার বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সামরিক বাহিনী। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি হামলার সময় তাদের মনে হয়েছে, শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। মেডিকেল চ্যারিটি 'ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স' (এমএসএফ) জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর সপ্তাহব্যাপী হামলার কারণে হাজার হাজার মানুষ জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে আটকা পড়েছে। সেখানে অব্যাহত বিমান হামলার কারণে বহু মানুষ বাস্তুচু্যত হয়ে পড়েছে। এক সপ্তাহ আগে জাবালিয়ায় তীব্র হামলা শুরু করেছিল সামরিক বাহিনী। তারা দাবি করেছিল, সেখানে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তা রুখতেই এই হামলা করা হয়। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এই হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বেসামরিক আটকা পড়েছেন। ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা 'ওয়াফা' শনিবার জানিয়েছে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান শুক্রবার রাতে জাবালিয়ায় একটি বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট বস্নকে বোমাবর্ষণ করেছে। চারটি আবাসিক ভবনে হামলায় ২২ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। আরও চারজন নিখোঁজ রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন। মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে 'আল জাজিরা'র রিপোর্টার হানি মাহমুদ বলেছেন, 'গাজা উপত্যকার উত্তরে শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।' তিনি আরও জানান, অনেক হতাহত ব্যক্তি বিস্ফোরণে 'ছিন্নভিন্ন বা রক্তাক্ত হয়ে হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন।' এদিকে, উত্তরে কামাল আদওয়ান হাসপাতালের জ্বালানিও প্রায় ফুরিয়ে গেছে। কর্মীরা বলেছেন, ইসরায়েলি সেনারা তাদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সেখান থেকে আল-জাজিরার মোয়াথ আল-কাহলুত সপ্তাহব্যাপী এই অবরোধকে 'শ্বাসরোধকারী' হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, পরিস্থিতি ভয়াবহ।' কেননা, হাসপাতালটিকেও অপারেশন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে হাসপাতালটি গুরুতর আহত থেকে শুরু করে নবজাতক রোগী পর্যন্ত সবাইকে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। 'প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি প্যারামেডিকস' জানিয়েছে, গাজা শহরে তুফাহর আশপাশের একটি বাড়িতে পৃথক হামলায় অন্তত তিনজন নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে উলেস্নখ করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত গাজা উপত্যকার অন্তত চারটি এলাকায় আঘাত হেনেছে ইসরায়েলি বাহিনীর গোলা ও রকেট।