গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলে যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান, তার জবাব দিতে মরিয়া ইসরায়েল। যে কোনো সময় তেহরানে প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে পারে ইসরায়েলি বাহিনী। এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আলোচনাও করছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে ইরান ঘোষণা দিয়েছে, ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে 'সার্বভৌমত্ব রক্ষা' করতে প্রস্তুত তারা। তথ্যসূত্র : এএফপি, রয়টার্স, আল-জাজিরা
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি আমির সাইদ ইরাভানি বলেছেন, আগ্রাসনের জবাব দিতে ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ইরান সম্পূর্ণ প্রস্তুত। তিনি বলেন, ইরান যুদ্ধ বা উত্তেজনা চায় না, তবে আন্তর্জাতিক আইন মেনে আত্মরক্ষার অধিকার চর্চা করতে পারে। এর আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্ত ইরানে কঠোর হামলার হুমকি দিয়েছেন।
ইসরায়েল বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য চিরশত্রম্ন ইরানকে পরিণতি ভোগ করতে হবে। অন্যদিকে তেহরান বলেছে, যে কোনো ধরনের পাল্টা হামলা প্রতিপক্ষের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে আনবে। এতে তেল উৎপাদনকারী অঞ্চলটিতে বৃহৎ পরিসরে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা এই সংঘাতে আমেরিকাকেও টেনে আনতে পারে।
লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুলস্নাহর নেতা হাসান নাসরুলস্নাহ নিহত হওয়ার পর দুই দেশের উত্তেজনা অনেকখানি বেড়েছে। তার হত্যার জবাব দিতে ইরান প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলে।
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাবে
না বলে বিশ্বাস আমেরিকার
হিজবুলস্নাহর শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মৃতু্য ও ইসরায়েলে দুটি ব্যর্থ হামলার পর কৌশলগত দিক থেকে কিছুটা বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে ইরান। তা সত্ত্বেও তেহরান পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার গড়ে তুলবে না বলে বিশ্বাস ওয়াশিংটনের।
'অফিস অব দ্য ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স'র মুখপাত্র বলেছেন, '২০০৩ সালে ইরান তাদের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি কর্মসূচি বাতিল করেছিল। আমাদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সর্বোচ্চ নেতা তা পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নেননি।'
গত সপ্তাহে ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এর জবাবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কা করছেন অনেকে। তবে মার্কিন প্রশাসন সম্ভাব্য এই হামলার বিরোধিতা করছে। এবার গোয়েন্দা কার্যালয়ের বক্তব্যের মাধ্যমে বাইডেন প্রশাসনের অবস্থানের কারণ বোঝা গেল।
ইরানের হামলার পর এক বক্তব্যে বাইডেন বলেছেন, দেশটির পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলা তিনি সমর্থন করেন না। তবে সমর্থন না দেওয়ার নেপথ্যের কারণ উলেস্নখ করেননি তিনি। তার বক্তব্যের কারণে রিপাবলিকানদের দিক থেকে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
মার্কিন কর্মকর্তারা অনেকদিন ধরেই বুঝে গিয়েছিলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করে অস্ত্র বানানো থেকে তাদের বিরত রাখা যাবে না। হামলায় তেহরান কেবল একটু পিছিয়ে পড়তে পারে। মাঝে দিয়ে তাদের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার গড়ে তোলার সংকল্প আরও শক্তিশালী হবে।
বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, 'আমরা এই ক্ষেত্রগুলো খুব সাবধানতার সঙ্গে সামলে চলছি।' এই বিষয়ে জাতিসংঘে ইরানের প্রতিনিধিকে প্রশ্ন করা হলে তাৎক্ষণিক কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। তবে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি পরিচালনার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে ইরান।