প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ইসরায়েলে

ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ১২ মিনিটের মাথায় দেড় হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়েছে ম ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালালে তাদের সব গ্যাসক্ষেত্র ধ্বংস করা হবে : ইরান

প্রকাশ | ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইসরায়েল স্বীকার না করলেও মার্কিন গণমাধ্যম 'ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল' বর্ণনা করেছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছিল ব্যাপক বিধ্বংসী। তারা লিখেছে, বেশ কয়েকটি এলাকায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে ইসরায়েলের মাটিতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে। 'ওয়াশিংটন পোস্ট'-ও জানিয়েছে, ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের কয়েকটি সামরিক ও নিরাপত্তা স্থাপনার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তথ্যসূত্র : তাস প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরান তার সাম্প্রতিক হামলার জন্য ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে বেশি গতিতে ছোটা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। ইরান ১৮০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে এবং এর মধ্যে ৩২টি ইসরায়েলের নেভাটিম বিমানঘাঁটিতে নিখুঁতভাবে আঘাত হেনেছে। এছাড়া তেল আবিবে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দপ্তরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। আবার ওয়াশিংটন পোস্ট শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, তারা ইসরায়েলি ঘাঁটিগুলো থেকে প্রাপ্ত ভিডিও ফুটেজ ও ছবি বিশ্লেষণ করে বুঝেতে পেরেছে যে, ইসরায়েলের তিনটি সামরিক স্থাপনায় অন্তত দুই ডজন ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। এর মধ্যে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় নেগেভ মরুভূমিতে অবস্থিত নেভাতিম বিমানঘাঁটিতে ২০টি এবং মধ্যাঞ্চলীয় নোফ ঘাঁটিতে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এছাড়া, তেল আবিবে অবস্থিত ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দপ্তরের কাছে অন্তত দুটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা দৈনিকটিকে জানিয়েছেন, স্থাপনাগুলোর ক্ষয়ক্ষতি দেখে মনে হয়, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে এসব স্থানে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সরাসরি আঘাত হেনেছে। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিক্ষেপ করার ১২ মিনিটের মাথায় সেগুলো দেড় হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়ে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তুগুলোতে আঘাত হানে। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, স্যাটেলাইট থেকে গৃহীত ছবি প্রমাণ করছে যে, ইরানি হামলায় প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এর চেয়ে অনেক বেশি, যেটা তেল আবিব প্রকাশ করছে না। অবশ্য ইসরায়েল ও মার্কিন সরকার দাবি করছে, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তাদের সামান্যই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তেল আবিব আরও দাবি করেছে, এসব ঘাঁটির নিয়মিত কাজকর্ম যথারীতি চলছে। ইসরায়েলের যে ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে তা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনায় অনেক বেশি ব্যয়বহুল এবং তাদের সরবরাহ খুবই সীমিত। এ কারণেই তাদের কিছু অঞ্চলের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হয়। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস, লেবাননভিত্তিক শিয়া আন্দোলন হিজবুলস্নাহ এবং ইরানের এলিট ফোর্স আইআরজিসির সিনিয়র কর্মকর্তাদের হত্যার প্রতিক্রিয়ায় ইরান গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যালিস্টিক এবং হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভয়াবহ হামলা চালায়। তেহরান বলেছে, তাদের ৯০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। কিন্তু ইসরায়েল বলেছে, ইরান দেশটিতে প্রায় ১৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার বেশিরভাগই বাধা দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি জেনারেল স্টাফ ইরানকে পাল্টা হামলা করে অবাক করার জন্য সঠিক মুহূর্ত বেছে নেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন। কিন্তু ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুলস্নাহ আলি খামেনি সতর্ক করে বলেছেন, ইসরায়েল ইরানে হামলার চিন্তা করলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।