মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার বিপক্ষে বাইডেন
ইরান বড় ভুল করেছে, তাদের ওপর কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে
প্রকাশ | ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েল যদি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করতে চায়, তাহলে তিনি সেটি সমর্থন করবেন না। এর বদলে ইহুদি ভূখন্ডটির বিরুদ্ধে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রটির ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য একটি বিস্তৃত আন্তর্জাতিক ঐকমত্য গড়ে তোলার পক্ষে তিনি। তথ্যসূত্র : রয়টার্স, এএফপি, বিবিসি
আমেরিকার প্রেসিডেন্টের জন্য নির্ধারিত বিমান এয়ার ফোর্স ওয়ানে ওঠার আগে বুধবার সাংবাদিকদের বাইডেন বলেন, 'ইসরায়েলিরা কী করতে যাচ্ছে, তা নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করব, তবে আমাদের সাতজনের (জি-৭ দেশগুলোর প্রধানরা) সবাই একমত যে, তাদের প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার আছে, কিন্তু তাদের সমানুপাতিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত।' বাইডেন জানান, তিনি শিগগিরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলবেন। কিন্তু কবে কথা বলবেন, সে বিষয়ে তিনি কোনো কিছু বলেননি। বাইডেন জোর দিয়ে বলেন, 'ইরান বড় ভুল করেছে। ইরানের ওপর কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।' ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোয় ইসরায়েলের হামলায় সমর্থন দেবেন কিনা, এমন প্রশ্নে বাইডেন বলেন, 'না'।
এর আগে বাইডেন জি-৭ দেশগুলোর (আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান ও যুক্তরাজ্য) সরকারপ্রধানদের সঙ্গে ইসরায়েল-ইরান সংকট ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আঞ্চলিক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার যে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে কথা বলেন। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জন পিয়ার বলেন, তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের অগ্রহণযোগ্য আক্রমণ নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি জানান, ইরানের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা জারিসহ সমন্বিত প্রতিক্রিয়া জানানো দরকার বলে জি-৭ নেতারা মনে করছেন। পিয়ার বলেন, বাইডেন ইসরায়েল ও এর জনগণের প্রতি পূর্ণ সংহতি ও সমর্থন জানিয়েছেন। ইসরায়েলের নিরাপত্তার বিষয়ে আমেরিকার প্রতিশ্রম্নতির বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলে ১৮০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় ইরান। এই হামলার জন্য ইরানকে কঠিন মূল্য দিতে হবে বলে প্রতিশ্রম্নতি জানিয়েছেন নেতানিয়াহু। কিছু বিশ্লেষক বলেছেন, এবার সম্ভবত ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া আরও তীব্র হবে। ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা অথবা তেল অবকাঠামোতে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা প্রকাশ করেছেন তারা।
মঙ্গলবার রাতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিরোধে ইসরায়েলের সঙ্গে যে তিনটি দেশের সামরিক বাহিনী কাজ করেছে, আমেরিকা তাদের অন্যতম। অপর দুটি দেশ যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। আমেরিকা ইরানকে সতর্ক করে বলেছে, এই হামলার ফল তাদের ভোগ করতে হবে। কিন্তু ওয়াশিংটন এ ক্ষেত্রে কূটনীতিকেই প্রাধান্য দিচ্ছে।
আমেরিকার সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুর্ট ক্যাম্পবেল বলেছেন, ইরানের হামলার যে কোনো প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে মার্কিন প্রশাসন ইসরায়েলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে চাইছে, কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে যে 'বিপজ্জনক পরিস্থিতি' বিরাজ করছে তাও আমলে নিচ্ছে আর সংঘাতের বিস্তৃতি ইসরায়েল ও আমেরিকা উভয়ের স্বার্থকে বিপদে ফেলতে পারে।