মধ্যপ্রাচ্য সংকট

মোসাদের সদর দপ্তরে হামলা হিজবুলস্নাহর

ইসরায়েলে প্রথমবারের মতো 'নূর' ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হিজবুলস্নাহর শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় বেঁচে গেলেন ফাতাহ নেতা

প্রকাশ | ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইসরায়েলে প্রথমবারের মতো 'নূর' ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হিজবুলস্নাহর শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় বেঁচে গেলেন ফাতাহ নেতা
ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হেডকোয়ার্টার (সদর দপ্তর) এবং সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা শাখা 'ইউনিট ৮২০০'র ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুলস্নাহ। 'ইউনিট ৮২০০'র ঘাঁটি ইসরায়েলের বাণিজ্যিক রাজধানী তেল আবিবের গিলিলতে অবস্থিত। হিজবুলস্নাহর হামলায় কেউ হতাহত হয়েছেন কিনা ইসরায়েল তা জানায়নি। এর আগেও গত মাসে মোসাদের সদর দপ্তর লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল হিজবুলস্নাহ। তবে ওই হামলায় মোসাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তথ্যসূত্র : এএফপি, রয়টার্স, আল-জাজিরা হামলার ব্যাপারে হিজবুলস্নাহ এক বিবৃতিতে বলেছে, 'তেল আবিবের উপকণ্ঠে অবস্থিত মোসাদ হেডকোয়ার্টার এবং গিলিলতে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা শাখা ইউনিট ৮২০০-এর ঘাঁটি লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু ফাদি-৪ রকেট ছোড়া হয়েছে।' মোসাদের সদর দপ্তর লক্ষ্য করে তেল আবিবে হামলার পর ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর হোম ফ্রন্ট কমান্ড মধ্য ও উত্তর ইসরায়েলের বেসামরিকদের জন্য নতুন বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে তেল আবিব, জেরুজালেম, শারন অঞ্চল, কার্মেল এলাকা, ওয়াদি এরা এবং উত্তর পশ্চিম তীর। এসব জায়গায় যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোর পাশে যদি পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র থাকে, তাহলে শুধুমাত্র সেগুলোতেই শিক্ষা কার্যক্রম চালানো যাবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে। এছাড়া বাইরে শুধুমাত্র ৩০ জন এবং ইনডোরে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৩০০ জন জড়ো হতে পারবেন বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে সমুদ্র সৈকত বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম 'টাইমস অব ইসরায়েল' জানিয়েছে, আগামী শনিবার পর্যন্ত এসব নির্দেশনা কার্যকর থাকবে। ইসরায়েলে প্রথমবারের মতো হিজবুলস্নাহর 'নূর' ক্ষেপণাস্ত্র এদিকে, সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় হিজবুলস্নাহর যোদ্ধারা প্রথমবারের মতো নূর ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের কাফ্‌র গিলাদ এলাকায় হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের সেনারা লেবাননের শহর, গ্রাম এবং বেসামরিক অবস্থানগুলোতে একের পর এক যে নারকীয় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তার জবাবে এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। হিজবুলস্নাহর একটি সূত্র জানিয়েছে, নূর ক্ষেপণাস্ত্র হচ্ছে অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। সোমবার গভীর রাত থেকে হিজবুলস্নাহ যোদ্ধারা ইসরায়েলের কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি ও অবৈধ ইহুদি বসতি লক্ষ্য করে ঝাঁকে ঝাঁকে রকেট ছুড়েছে। হিজবুলস্নাহ এক বিবৃতিতে বলেছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এবং লেবাননের জনগণকে রক্ষা করার জন্য মঙ্গলবার ভোর থেকে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের স্টুলা বসতিতে দখলদার সেনাদের লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালানো হয়েছে। এসব রকেট সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে বলে হিজবুলস্নাহর বিবৃতিতে জানানো হয়। হিজবুলস্নাহর ভয়াবহ রকেট হামলার কারণে লুৎফেন্সা এয়ার লাইন্স ইসরায়েলে তাদের ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় বেঁচে গেলেন ফাতাহ নেতা অন্যদিকে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় সাইডন শহরের আইন আল-হিলওয়েহ শরণার্থী শিবিরে মঙ্গলবার ভোরে বড় ধরনের বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তুর্কি বার্তা সংস্থা 'আনাদোলু'র লেবানন সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, ফাতাহ নেতা মুনির আল-মাকদাহর বাসভবন লক্ষ্য করে এই হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলায় ফাতাহ নেতা বেঁচে গেলেও তার ছেলেসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এই হামলায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি সূত্র জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোরে সাইডনের আইন আল-হিলওয়েহ শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিলেন ফাতাহ নেতা মুনির আল-মাকদাহ। তবে হামলায় তিনি বেঁচে গেছেন বলে জানা গেছে।