ইউক্রেন যুদ্ধ

পরমাণু নীতি বদল রাশিয়ার, চিন্তার ভাঁজ পশ্চিমাদের কপালে

দেশের মানুষকে নিরাপদে রাখতে সর্বশেষ হাতিয়ার পরমাণু অস্ত্র

প্রকাশ | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন
ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই রাশিয়ার পরমাণু নীতিতে পরিবর্তন আনার কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, পরমাণু শক্তিধর কোনো দেশ পরমাণু শক্তি নেই, এমন দেশকে সাহায্য করলে তা যৌথ আক্রমণ বলে ধরে নেবে রাশিয়া। পুতিনের এই সিদ্ধান্ত রাশিয়ার পারমাণবিক হামলার রাস্তা প্রশস্ত করল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তথ্যসূত্র : এএফপি, ডিডাবিস্নউ নিউজ, রয়টার্স গত বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাশিয়ার পরমাণু কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। সেখানে তিনি বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো পরমাণু শক্তিহীন দেশ আক্রমণ চালালে তা একরকম। কিন্তু সেই দেশ যদি পরমাণু শক্তিধর অন্য দেশ বা একাধিক দেশের থেকে সাহায্য পায়, তাহলে রাশিয়া বিষয়টিকে যৌথ আক্রমণ হিসেবে ধরে নেবে এবং সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেবে। পুতিনের এই বক্তব্য চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে পশ্চিমা বিশ্বে। ইউক্রেন সাহায্যকারী দেশগুলোর কাছে দূরপালস্নার ক্ষেপণাস্ত্র চাইছে, যেন তারা রাশিয়ার আরও ভেতরে আক্রমণ করতে পারে। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সম্প্রতি বলেছেন, ইউক্রেনের পারমাণবিক চুলিস্নগুলোতে হামলার ছক কষছে রাশিয়া। যেভাবেই হোক তা আটকানো প্রয়োজন। ইউক্রেন এখনো পশ্চিমা দেশগুলোর সরবরাহ করা দূরপালস্নার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার মূল ভূখন্ডে আঘাত করার অনুমতি পায়নি। তবে এ রকম অনুমতি প্রার্থনা করে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে ধরনা দিচ্ছে। পুতিন জানিয়েছেন, ১৯৯৯ সালে বেলারুশের সঙ্গে রাশিয়ার বিশেষ চুক্তি হয়েছিল। বেলারুশ রাশিয়ার কাছের বন্ধু। বেলারুশে কোনো ধরনের আক্রমণ হলে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুতিন। উলেস্নখ্য, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বেলারুশ। তারা সরাসরি ইউক্রেনে সেনা না পাঠালেও রুশ সেনাদের জন্য রাস্তা খুলে দিয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, বেলারুশের আকাশ ব্যবহার করে ইউক্রেন রাশিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে, যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে। এমনটি আর হতে দেওয়া যাবে না। সরাসরি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছেন তিনি। পুতিন বলেছেন, পরমাণু অস্ত্র এতদিন ধরে রাশিয়ার জনগণকে সম্ভাব্য আক্রমণের হাত থেকে সুরক্ষা দিয়েছে। রাশিয়ার হাতে পরমাণু অস্ত্র আছে, এ কথা জেনে বহু দেশ আক্রমণ করেনি। বর্তমান সময়ে যুদ্ধের কৌশল বদলেছে। রাশিয়াও নিজেদের লড়াইয়ের কৌশল বদলেছে। তবে দেশের মানুষকে নিরাপদে রাখতে সর্বশেষ হাতিয়ার পরমাণু অস্ত্র। আর কোনো উপায় না থাকলে রাশিয়া ওই অস্ত্র ব্যবহার করতে বাধ্য হবে। ইউক্রেনকে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাজ্য। সেগুলো রাশিয়ায় হামলা চালাতে ব্যবহার করা নিয়ে সম্প্রতি জল্পনা বেড়েছে। আর গত সপ্তাহে আমেরিকায় যান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার। সেখানে তিনি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। একটি রিপোর্ট বলছে, শক্তিশালী এই দুই রাষ্ট্রনেতা রাশিয়ার ভূখন্ডে ইউক্রেনের হামলা নিয়ে আলোচনা করেন। আবার কয়েকদিন আগেই আমেরিকা সফরে যান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে তিনি ইউক্রেনের দ্রম্নত এবং নিরবিচ্ছিন্ন সামরিক সাহায্যের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।