ইসরাইল-হিজবুলস্নাহ পাল্টাপাল্টি হামলা
মধ্যপ্রাচ্য সংকট
প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ইসরাইল ও লেবাননের হিজবুলস্নাহ গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই বেড়ে গেছে। দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি হামলা চালাচ্ছে। দক্ষিণ লেবাননের সীমান্তবর্তী শহরগুলোতে ক্রমাগত বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। রোববার সকালে হিজবুলস্নাহর অন্তত ১১০টি ঘাঁটি ও স্থাপনা লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে তারা। এর আগে শনিবার সশস্ত্র গোষ্ঠীটির অন্তত ২৯০টি স্থাপনায় হামলা চালানোর দাবি করে ইসরাইলি বাহিনী। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সীমান্তবর্তী গ্রাম আইতারুনে সর্বশেষ ইসরাইলি হামলায় একজন নিহত এবং একজন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, উত্তর ইসরাইল লক্ষ্য করে অন্তত ১১৫টি রকেট হামলা চালিয়েছে হিজবুলস্নাহ। এর মধ্যে অনেকগুলো ইসরাইলের গভীরে আঘাত হেনেছে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স, এএফপি
ইরান-সমর্থিত লেবাননের এই গোষ্ঠীর মুহুর্মুহু রকেট হামলায় ইসরাইলে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। হামলা থেকে প্রাণে বাঁচতে লাখ লাখ ইসরাইলি আশ্রয় কেন্দ্রে পালিয়েছেন। এই হামলার পর ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলের সব স্কুল ও সমুদ্র সৈকত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদাভ শোশানি বলেছেন, প্রোজেক্টাইল ধেয়ে আসার সময় ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলজুড়ে বোমা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে লাখ লাখ মানুষ ঠাঁই নিয়েছেন। এর আগে, ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লেবানন থেকে ছোড়া রকেটে ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলের একাধিক স্থাপনা ও বাড়িঘরে আগুন ধরে গেছে। ইসরাইলের জরুরি মেডিকেল সেবা সংস্থা বলেছে, রকেটের ধ্বংসাবশেষের আঘাতে কমপক্ষে চারজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনই ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলীয় হাইফা শহরের বাসিন্দা।
হিজবুলস্নাহ দাবি করেছে, তারা হাইফা শহরের কাছে ইসরাইলের সীমানার অভ্যন্তরে ৫০ কিলোমিটার গভীরে ও রামাত ডেভিড বিমান ঘাঁটিতে দুই রাউন্ড ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হাইফাতে অন্তত ৮৫টি রকেট নিক্ষেপ করেছে হিজবুলস্নাহ। এতে উত্তর ইসরাইলে আগুন ছড়িয়ে পড়ে ও কিরিয়াত বিয়ালিকের বেশ কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এমনকি উত্তর ইসরাইলের হাইফার কাছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা কোম্পানি রাফায়েলের কারখানায় আঘাত হেনেছে হিজবুলস্নাহ। রোববার গোষ্ঠীটি এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। হিজবুলস্নাহ জানিয়েছে, আক্রমণটি পেজার ও ওয়াকিটকি আক্রমণের 'প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ার' অংশ। উলেস্নখ্য, গত মঙ্গলবার ও বুধবার লেবাননে হিজবুলস্নাহর ব্যবহৃত পেজার ও ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৪২ জন নিহত এবং তিন হাজারের বেশি আহত হন। এটি ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, ইসরাইল হামলার পেছনে ছিল। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইসরাইল হিজবুলস্নাহর ওপর এমন এক সিরিজ আঘাত হেনেছে, যা তারা কল্পনাও করতে পারেনি। তিনি বলেছেন, 'যদি হিজবুলস্নাহ বার্তাটি বুঝতে না পারে, তবে আমি আপনাদের প্রতিশ্রম্নতি দিচ্ছি, এই বার্তাটি বুঝতে পারবে।'
পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের পর রোববার সকাল থেকে দুই পক্ষের মধ্যে এই পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। আগেও হামলা-পাল্টা হামলা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী ঘোষণা দিয়েছে, তারা লেবাননে আরও বেশি হিজবুলস্নাহ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা অব্যাহত রাখবে। এর ফলে এই অঞ্চল আরেকটি যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে যা অবশ্যম্ভাবী বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন লেবাননে জাতিসংঘের বিশেষ সমন্বয়ক জিনিন হেনিস।