আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে গাজায় আর যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্ভব নয় বলে মনে করেন দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তারা। আমেরিকাভিত্তিক পত্রিকা 'ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল' কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে ইসরাইলি হামলা থামাতে মধ্যস্থতাকারী কাতার ও মিসরের সঙ্গে মিলে আমেরিকা হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তথ্যসূত্র : ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল, রয়টার্স, আল-জাজিরা
ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল হোয়াইট হাউস, স্টেট ডিপার্টমেন্ট (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) এবং পেন্টাগনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কথা উলেস্নখ করেই এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বৃহস্পতিবার পেন্টাগনের মুখপাত্র সাবরিনা সিং সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি আপনাদের বলতে পারি, আমরা বিশ্বাস করি না যে, চুক্তিটি ভেস্তে যাচ্ছে।'
অথচ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিস্নংকেন দুই সপ্তাহ আগে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির ৯০ শতাংশ বিষয়ে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে। মধ্যস্থতাকারী আমেরিকা, কাতার এবং মিসর কয়েক মাস ধরে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা করলেও ইসরাইল ও হামাসকে চূড়ান্ত চুক্তিতে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষ করে দুটি দাবি নিয়ে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। প্রথমত গাজা ও মিসরের মধ্যে ফিলাডেলফি করিডোরে বাহিনী রাখার জন্য ইসরাইলের দাবি এবং বন্দি বিনিময়ের নিশ্চয়তা।
সংঘাত আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা কমাতে পারে বলে মন্তব্য করেছে আমেরিকা। বাইডেন গত ৩১ মে তিন দফায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ইসরাইল এতে 'সম্মত' হয়েছে বলে দাবি করলেও পরে এ নিয়ে আর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের আকস্মিক হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ জন নিহত হন। ওই সময় ২৫০ জনকে আটক করে নিয়ে যায় হামাস সদস্যরা। এর প্রতিশোধ নিতে হামাসকে নির্মূল করার কথা বলে গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরাইল। স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, হামাস শাসিত গাজায় ইসরাইলের হামলায় এ পর্যন্ত ৪১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ২৩ লাখ মানুষ বাস্তুচু্যত হয়েছেন। ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় গাজায় ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। তবে যে লক্ষ্য নিয়ে ইসরাইল গাজায় অভিযান শুরু করেছিল, তা অধরাই থেকে যাচ্ছে। অর্থাৎ, হামাস তো নির্মূল হয়ইনি, বরং আরও শক্তিশালী হয়েছে। চলছে দুই পক্ষের প্রচন্ড লড়াই। ফলে ইসরাইল গাজা অভিযান থেকে এখনই সরে আসবে না। আর এ কারণে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হচ্ছে না বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে।
হামলা চলছেই, নারী ও শিশুসহ
নিহত আরও ৪০
এদিকে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে ইসরাইলি বর্বরতায় নিহত হয়েছেন আরও ৪০ ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তর বলেছে, বৃহস্পতিবার গাজা সিটিতে ইসরাইলি বোমাবর্ষণে কমপক্ষে ২৮ জন নিহত হন। এরপর গাজা শহরে দুটি ইসরাইলি হামলায় ১২ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।