এক রাতে নিহত ১৯
গাজায় সংরক্ষিত এলাকায় ফের ইসরাইলি বিমান হামলা
নিহতদের মধ্যে নারী-শিশুসহ একই পরিবারের ১১ সদস্য রয়েছেন
প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ফিলিস্তিনের গাজায় শরণার্থীদের জন্য সংরক্ষিত এলাকা বলে পরিচিত আল-মাওয়াসিতে ইসরাইলি বাহিনী আবারও হামলা চালিয়েছে। তাদের বিমান হামলায় এক রাতে ১৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের একই পরিবারের ১১ সদস্য রয়েছেন। আর এদের মধ্যে রয়েছেন নারী এবং শিশুও। শনিবার ভোরে গাজা শহরের একটি বাড়িতে এ হামলা চালানো হয়। হামলায় আহত হয়েছেন ৬০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি। স্থানীয় লোকজন এবং গাজার প্রশাসন হামলায় হতাহতের ঘটনা নিশ্চিত করেছে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, সিএনএন, এএফপি
আশঙ্কা করা হচ্ছে, হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি। কারণ নিহত এবং আহতদের মধ্যে যাদের হাসপাতালে আনা সম্ভব হয়েছে, তাদের ভিত্তিতে হতাহতের এই সংখ্যা জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ধ্বংসস্তূপ এবং বালিতে অনেকের দেহ চাপা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন এবং উদ্ধারকর্মীরা বাকি হতাহতদের উদ্ধারে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু করেছেন।
আল-মাওয়াসির বাসিন্দা মামুদ আল নিমস বলেন, 'রাতের বেলা আমরা ঘুমিয়েছিলাম। হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দে জেগে উঠলাম এবং তারপরই চারদিক থেকে গুলির শব্দ শুনলাম। আমরা এখনো বুঝতে পারছি না যে, শরণার্থী এলাকার ঠিক কোথায় হামলা হয়েছিল এবং যারা ধ্বংসস্তূপ ও বালির নিচে চাপা পড়েছে, তাদের অবস্থান কোথায়। পুরো এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।'
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল বলেন, 'পূর্ব গাজা শহরের বুস্তান পরিবারের বাড়িতে ইসরাইলি হামলার পর আমরা ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করি। এদের মধ্যে চারজন শিশু এবং তিনজন নারী রয়েছেন।' তিনি বলেন, গাজা শহরের আল-তুফাহ এলাকার শুজাইয়া স্কুলের কাছে এ হামলা চালানো হয়। উদ্ধারকারীরা এখনো নিখোঁজদের খোঁজে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন।
আল-মাওয়াসি শরণার্থী এলাকাটি গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের নিকটবর্তী। হামলার পর নিহত এবং আহতদের খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। হতাহতদের মধ্যে নারী-পুরুষ, শিশু সব বয়সের মানুষ রয়েছেন।
এদিকে, শুক্রবার এক বিবৃতিতে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, আল-মাওয়াসিতে হামাসের অন্তত তিনজন জ্যেষ্ঠ নেতা আত্মগোপন করে আছেন বলে গোয়েন্দা তথ্য ছিল তাদের কাছে। এই তিনজন হলেন হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের ড্রোন বিভাগের প্রধান সামের ইসমাইল কাদের আবু দাক্কা, ব্রিগেডের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ওসামা তাবেশ এবং জ্যেষ্ঠ হামাস নেতা আয়মান মাবহৌ। এ কারণেই সেখানে হামলা চালানো হয়েছে। তবে যাদের লক্ষ্য করে এ হামলা পরিচালিত হয়েছিল, তারা নিহত হয়েছেন কিনা- বিবৃতিতে তা নিশ্চিত করেনি আইডিএফ।
গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখন্ডটিতে ইসরাইলের সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে কয়েক লাখ বাস্তুচু্যত ফিলিস্তিনি খান ইউনিসে পালিয়েছেন।
১১ মাস ধরে চালানো ইসরাইলি হামলায় এরই মধ্যে ৪১ হাজার ১১৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯৫ হাজার ১২৫ ফিলিস্তিনি। হামলার পর বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া অনেকেই নিখোঁজ হয়েছেন। তারা মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।