আরজি কর কান্ড

মমতাকে সামাজিকভাবে বয়কটের ঘোষণা পশ্চিমবঙ্গের গভর্নরের

জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতিতে বিনা চিকিৎসায় ২৯ জনের মৃতু্য

প্রকাশ | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিভি আনন্দ বোস
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামাজিকভাবে বয়কট করার ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যটির গভর্নর সিভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার সোস্যাল মিডিয়া পস্ন্যাটফর্ম 'এক্সে' পোস্ট করা এক ভিডিওতে তিনি এই ঘোষণা দেন। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে এক নারী শিক্ষানবিস চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতির কথা তুলে বৃহস্পতিবার রাতে ভিডিও বার্তা দেন গভর্নর সিভি আনন্দ বোস। সেখানে তিনি বলেন, 'আমি সামাজিকভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে বয়কট করছি।' কী এই সামাজিক বয়কট, গভর্নর তথা রাজ্যপাল সেটিও নিজের পাঁচ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সিভি আনন্দ বোসের বক্তব্য, 'সামাজিক বয়কট মানে আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোনো পাবলিক পস্ন্যাটফর্মে একসঙ্গে থাকব না।' এদিনের ভিডিও বার্তায় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের মুখে শোনা গেছে 'লেডি ম্যাকবেথ' প্রসঙ্গও। তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েলকে নিয়েও। তার বক্তব্য, রাজভবনের পক্ষ থেকে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হলেও তা করা হয়নি। রাজ্যপালের এই বক্তব্যের পর রাজ্য-রাজভবন বিতর্কই নয়, রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যেও একটা টানাপড়েন সৃষ্টি হলো। যদিও এর আগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা একাধিকবার রাজ্যপালের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ নিয়ে দ্বিধার কথা তুলে ধরেছেন প্রকাশ্যেই। মমতা বলেছিলেন, 'তার রাজভবনে কেন সবাই যাবেন? রাজভবনে যা কীর্তি-কেলেঙ্কারি ঘটছে, তাতে মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছে, আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছে।' এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও গত ১৫ আগস্ট চা-চক্রে রাজভবনে গেলেও গিয়েছিলেন 'টিম' নিয়ে। সেখানে বলেছিলেন, 'আমি যখন এসেছি, আমি বলেছিলাম- আমার একা আসতে একটু প্রবলেম আছে। তাই আমি টিম নিয়ে আসব। আমরা কিন্তু একসঙ্গে ১০-১২ জন এসেছি। এটা স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বলে এসেছি।' আর এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের মুখে শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে সামাজিক বয়কটের কথা। যদিও আনন্দ বোসের এই মন্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেছেন, 'রাজ্যপাল যা বলেছেন, তা শুধু আপত্তিকরই নয়, সাংবিধানিকভাবেও ওই চেয়ারে বসে তিনি এ কথা বলতে পারেন না। উনি ওনার এখতিয়ার বহির্ভূত কাজ অনবরত করে চলেছেন। এগুলো সীমা লঙ্ঘন। রাজ্যপালের সমস্যা হলে উনি চলে যেতে পারেন।' এদিকে, আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে রাজ্যের জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে এখন পর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় ২৯ জনের মৃতু্য হয়েছে। এমনটাই দাবি করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করলেন, ওই ২৯ জনের পরিবারকে দুই লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। শুক্রবার মমতা বলেছেন, 'জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। তার ফলে ২৯ জনের মৃতু্য হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার দুই লাখ রুপি আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করছে। ২৯ জন মৃতের পরিবারকে ওই টাকা দেওয়া হবে।'