রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। মঙ্গলবারের এই হামলায় এক নারী নিহত হয়েছেন। হামলায় কয়েকটি ফ্ল্যাট ধ্বংস হয়েছে এবং মস্কোর আশপাশের বিমানবন্দরগুলো থেকে প্রায় ৫০টি ফ্লাইট ঘুরে যেতে বাধ্য হয়েছে। তথ্য সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি
এদিকে, রুশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা রাতভর মস্কোর আশপাশে অন্তত ১৫টি ড্রোন ভূপাতিত দাবি করেছেন। মঙ্গলবার কর্মকর্তারা জানান, এই ড্রোন হামলায় একটি আবাসিক ভবনে আগুন ধরে যায়। এর জেরে মস্কোতে ৩০টিরও বেশি ফ্লাইট স্থগিত করা হয়। এ ছাড়াও রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ব্রায়ানস্ক এবং লিপেটস্ক অঞ্চলে ৬০টির বেশি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আঞ্চলিক গভর্নররা। তবে সেসব এলাকায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
মস্কোর আঞ্চলিক গভর্নর আন্দ্রেই ভরোবিয়োভ জানিয়েছেন, রামেনস্কয়ে ৪৬ বছর বয়সি এক নারী নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে তাদের ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। ওই অঞ্চলের বাসিন্দা আলেকজান্ডার লি বলেন, 'আমি জানালার দিকে তাকিয়ে আগুনের গোলা দেখতে পাই।' নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ভোরের দিকে তিনি তার ভবনের বাইরে একটি ড্রোনের শব্দ শুনতে পান।
গত ৬ আগস্ট হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সেনা রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক ঢুকে লড়াই চালাচ্ছে এবং রাশিয়ার আরও ভেতরে বেশি বেশি বড় ধরনের ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ ড্রোন শিল্প দ্রম্নত বিকশিত হচ্ছে। রাশিয়ার জ্বালানি, সামরিক এবং পরিবহণ অবকাঠামোর ওপর ড্রোন হামলা বৃদ্ধি করেছে কিয়েভ।
রাশিয়ার 'রিয়া' সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ঝুকোভো বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মস্কোর অন্যান্য বিমানবন্দরে ৩০টির বেশি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে।
রাতে মস্কো থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রামেনস্কয়ে জেলায় ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় অন্তত দুটি বহুতল আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাটে আগুন ধরে যায়। এই অঞ্চলে প্রায় আড়াই লাখ লোক বসবাস করে।
নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে সংযুক্ত রাশিয়ার 'টেলিগ্রাম' চ্যানেলে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, বহুতল আবাসিক ভবন থেকে আগুন বের হচ্ছে। হামলায় পাঁচটি ফ্ল্যাট ধ্বংস হয়েছে। তুলা অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ একটি জ্বালানি ও শক্তি স্থাপনার ওপর পড়েছে। তবে স্থাপনার প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়া প্রভাবিত হয়নি।
সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে চালানো ড্রোন হামলার ধারাবাহিকতায় এই হামলাগুলো চালিয়েছে ইউক্রেন। বিশেষ করে রাশিয়ার জ্বালানি ও বিদু্যৎ স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলাগুলো চালানো হয়েছে। হামলাগুলো এমন এক সময় চালানো হলো, যখন পূর্ব ইউক্রেনে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে রুশ বাহিনী।