সীমান্ত অঞ্চলে হামলা

একে-অপরকে দোষারোপ করছে ইউক্রেন ও রাশিয়া

ইউক্রেনের সুমি অঞ্চলে দুইজন নিহত এবং চারজন আহত। আর রাশিয়ার বেলগোরোদে তিনজন আহত

প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সীমান্তবর্তী অঞ্চলে রাতভর বিমান হামলার জন্য একে-অপরকে দোষারোপ করছে ইউক্রেন ও রাশিয়া। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, সুমি অঞ্চলে দুইজন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছেন। ওদিকে রাশিয়া বলছে, বেলগোরোদে তিনজন আহত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'টেলিগ্রামে' রোববার ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সুমি অঞ্চলে আহতদের মধ্যে দুইজন শিশু রয়েছে। হামলায় বেশ কয়েকটি আবাসিক বাড়ি ও গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স, এএফপি সীমান্তের ওপারে রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলগোরোদে ইউক্রেনের হামলায় দুই শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছে। টেলিগ্রামে অঞ্চলটির গভর্নর ভিসেচলাভ গস্নাডকভ একথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, দুটি আবাসিক ভবন ধ্বংস এবং আরও ১৫টির বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টেলিগ্রামে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, বেলগোরোদের আকাশে ইউক্রেনের ছোড়া দুটি ড্রোন ধ্বংস করেছে তারা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই সুমি ও বেলগোরোদ অঞ্চল দুটি ক্রমাগত হামলার শিকার হয়ে আসছে। উভয়পক্ষই বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, যুদ্ধক্ষেত্রে একে-অপরের অবকাঠামোকে নিশানা করে হামলা করা হচ্ছে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রম্নয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার 'বিশেষ সামরিক' অভিযান শুরুর পর থেকে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। বাস্তুচু্যত হয়েছেন লাখ লাখ ইউক্রেনীয়। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বহু গ্রাম ও নগরী। ইউক্রেনের আরও এক শহর দখলের দাবি রাশিয়ার এদিকে, ইউক্রেনের আরও একটি শহর দখলের দাবি করেছে রাশিয়া। রোববার রাশিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় একটি শহর দখল করেছে। মস্কোর বাহিনী কৌশলগত শহর পোকরভস্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলেও জানা গেছে। এক বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রুশ বাহিনী দোনেৎস্ক অঞ্চলের নোভোরোডিভকা এলাকা মুক্ত করেছে। এটি পোকরভস্ক শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার আগে ওই শহরে ১৪ হাজারের বেশি বাসিন্দার বসবাস ছিল। অন্যদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার বলেছেন, ৩০ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধের মাধ্যমে ইউক্রেনে তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল পূর্ব দোনবাস এলাকা দখল করা। এর আগে ইউক্রেনে বড় ড্রোন হামলা চালায় রাশিয়া। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, মোট ৬৭টি দীর্ঘ পালস্নার শাহেদ ড্রোন ছুড়েছে মস্কো। তবে এর মধ্যে ৫৮টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করা হয়। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ ঘটনায় ইউক্রেনজুড়ে ১১ অঞ্চলে আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে পার্লামেন্ট ভবনের পাশে ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। এ সম্পর্কিত বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছে। তবে কিয়েভে রাশিয়ার ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র পাওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। কারণ সেখানে সোভিয়েত আমলের নেটওয়ার্ক ও পশ্চিমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে ঘেরা। টেলিগ্রামের পোস্ট করা ছবিতে দেখা গেছে, পার্লামেন্ট ভবনের কাছে মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অন্তত চারটি ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ। এর আগে রাশিয়ায় দীর্ঘ পালস্নার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন দিতে পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। মূলত রাশিয়ার অভ্যন্তরে দূরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা ও মস্কোর ওপর চাপ বাড়াতে এই পদক্ষেপ চান তিনি।