রাশিয়া ইউক্রেনে সর্বাত্মক সামরিক শুরু করে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রম্নয়ারি। এরপর আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে এই সংঘাত চলছে। হাজারও মানুষের প্রাণহানি হলেও সংঘাত বন্ধের কোনো আভাস নেই। অন্যদিকে, রুশ এই 'আগ্রাসন' মোকাবিলায় নিজেদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমা সহায়তায় পুষ্ট ইউক্রেন। সম্প্রতি ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ার অভ্যন্তরেও হামলা বাড়িয়েছে। এমন অবস্থায় আমেরিকাকে সতর্ক করে দিয়েছে রাশিয়া। দেশটি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ইউক্রেন ইসু্যতে 'রেড লাইন' অতিক্রম করবেন না। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি, রয়টার্স
ইউক্রেনে চলমান সংঘাতে রাশিয়ার 'রেড লাইন' অতিক্রম না করার জন্য আমেরিকাকে সতর্ক করে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, মস্কোর সঙ্গে নিজের পারস্পরিক সংযমের বোধ হারাতে শুরু করেছে ওয়াশিংটন। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বার্তা সংস্থা একথা জানিয়েছে। গত বুধবার এক সাক্ষাৎকারে ল্যাভরভ বলেন, ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে আমেরিকানরা 'তাদের নিজস্ব রেড লাইন অতিক্রম করেছে'।
বার্তা সংস্থার রিপোর্টে তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, 'তাদের (আমেরিকা) বোঝা উচিত, আমাদের রেড লাইনগুলো বোকা বানানোর মতো কিছু নয়। এবং তারা খুব ভালো করেই জানে, তারা কোথায় আছে।' ল্যাভরভ আরও বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকা পারস্পরিক সংযমের বোধ হারাতে শুরু করেছে এবং এটিকে তিনি 'বিপজ্জনক' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, 'মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবি বলেছেন, ইউক্রেনের জন্য সমর্থন বাড়ানোর বিষয়টিকে সাবধানতার সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত, যাতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধকে উসকে দেওয়া না হয়। কারণ সংঘাত বা যুদ্ধ ইউরোপে পৌঁছে যাওয়াটা দেখা হবে দুঃখজনক।'
ল্যাভরভ বলেন, তিনি আশা করেন- ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের সম্ভাব্য পরিণতি উপলব্ধি করবে ওয়াশিংটন। তিনি বলেন, 'আমি নিশ্চিত, সেখানে উলেস্নখযোগ্য প্রভাব সম্পন্ন যুক্তিবোধ সম্পন্ন লোক রয়েছেন। এবং আমি আশা করি, মার্কিন স্বার্থ বিবেচনায় নেওয়া হবে।'
উলেস্নখ্য, প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন ২০২২ সালে রুশ সেনাবাহিনীকে ইউক্রেনে পাঠিয়ে যুদ্ধ শুরু করেন। তিনি এই যুদ্ধকে পশ্চিমের সঙ্গে পূর্বের ঐতিহাসিক সংগ্রামের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়াকে অপমানিত করা হয়েছে।
ইউক্রেন এবং পশ্চিমারা বলছে, যুদ্ধের নামে পুতিন সাম্রাজ্যবাদী ধাঁচে ভূখন্ড দখলে নিয়োজিত রয়েছেন। তারা রাশিয়াকে পরাজিত করার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে। যদিও বর্তমানে ক্রিমিয়াসহ ইউক্রেনের প্রায় ১৮ শতাংশ এবং পূর্ব ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে রাশিয়া। রাশিয়া বলেছে, একসময় রুশ সাম্রাজ্যের অংশ থাকা এসব ভূখন্ড এখন আবার রাশিয়ার অংশ হয়েছে এবং এগুলো আর কখনোই ফেরত দেওয়া হবে না।
এদিকে, রাশিয়ার ড্রোন ও বোমা হামলা থেকে দেশকে রক্ষা করতে ইউক্রেনকে ৬৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র দেবে যুক্তরাজ্য। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। প্রায় ৫০টি দেশের একটি জোট 'ইউক্রেন ডিফেন্স কন্টাক্ট গ্রম্নপ'। জার্মানির একটি মার্কিন বিমানঘাঁটিতে এই জোটের এক বৈঠকে অংশ নেওয়ার সময় ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি নতুন এই অস্ত্র সরবরাহের ঘোষণা দেন, যার দাম ২১৩ মিলিয়ন ডলার।