মুখ্যমন্ত্রীরা 'রাজা' নন, বলেছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট
প্রকাশ | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ভারতের উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রীর 'পছন্দের' কর্মকর্তাকে নিয়োগ করার সিদ্ধান্তকে ঘিরে রাজ্যটিতে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। এবার দেশটির সুপ্রিম কোর্ট থেকেও ব্যাপক সমালোচনা করা হয়েছে সেই সিদ্ধান্তের। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা পুরনো দিনের রাজাদের মতো আচরণ করতে পারেন না বলেও দেশটির শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বৃহস্পতিবার বলছে, উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামীর এক বিতর্কিত আইএফএস অফিসারকে 'রাজাজি টাইগার রিজার্ভ'র ডিরেক্টর (পরিচালক) হিসেবে নিয়োগ করাকে কেন্দ্র করেই ঘটনার সূত্রপাত হয়। অভিযোগ রয়েছে, রাজ্যের বনমন্ত্রী ও বন দপ্তরের বিরোধিতা সত্ত্বেও ওই আইএফএস অফিসারকে নিয়োগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। বুধবার বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি পিকে মিশ্র ও বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়, 'আমরা আর সামন্ত যুগে নেই। সরকারের প্রধানরা পুরনো দিনের রাজার মতো আচরণ করতে পারেন না।'
রাজ্য সরকার অবশ্য আদালতের ওই বেঞ্চকে বলেছে, বিতর্কিত ওই নিয়োগের আদেশ গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর জবাবে বিচারপতির বেঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়, 'দেশে জনগণের আস্থা বলে একটা বিষয় আছে। সরকারের প্রধান পুরনো দিনের রাজার মতো হতে পারেন না যে, তারা যা বলবেন, তাই-ই হবে। আমরা সামন্ত যুগে বসবাস করি না, মুখ্যমন্ত্রী বলে যা খুশি করতে পারবেন?'
যে আইএফএস অফিসারকে নিয়োগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ধামী, তিনি আগে জিম করবেট টাইগার রিজার্ভের ডিরেক্টর ছিলেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। এরপরও কেন ওই কর্মকর্তার প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর এই 'অতিরিক্ত ভালোবাসা', জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট।
ভারতের শীর্ষ আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানায়, ফার্স্ট অফিসার থেকে ডেপুটি সেক্রেটারি, প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এবং রাজ্যের বনমন্ত্রীও এই কর্মকর্তার নিয়োগের বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ধামী কারও কথা শোনেননি। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, 'যদি অফিসার থেকে ডেপুটি সেক্রেটারি, এরপর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এবং মন্ত্রী প্রথম থেকে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন, তখন কেন তিনি (মুখ্যমন্ত্রী) সেই প্রস্তাব খারিজ করছেন বা বিরোধিতা করছেন, এর ব্যাখ্যা থাকা উচিত। যার কিছুই গুণ নেই, তার জন্য একজন ভালো অফিসারের বলিদান দিতে পারেন না। যদি তিনি (বিতর্কিত কর্মকর্তা) কিছু না-ই করে থাকেন, তবে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হচ্ছে কেন? কোনো প্রাথমিক প্রমাণ না থাকলে, কখনো কারওর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হয় না।'