ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পুতিন
আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রাশিয়া
'আলোচনার বিষয়টি আমরা কখনোই প্রত্যাখ্যান করিনি। তবে আলোচনা ক্ষণস্থায়ী চাহিদার ভিত্তিতে নয়, এটা হতে হবে ইস্তাম্বুলের উদ্যোগের ভিত্তিতে'
প্রকাশ | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন বলেছেন, তার দেশ ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত। যদিও রাশিয়ার অভ্যন্তরে প্রবেশ করে কিয়েভের হামলার পর আলোচনার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি। চলতি বছরের আগস্টে সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে হামলা শুরু করে ইউক্রেন। এরপর রাশিয়ার বেশ কিছু গ্রাম দখলে নেয় হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সেনা। পরে পুতিন বলেছিলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়। তথ্যসূত্র : এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স
বৃহস্পতিবার রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় ভস্নাদিভস্তকে অনুষ্ঠিত 'ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামে' প্রশ্নোত্তর পর্বে পুতিন বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনার জন্য রাশিয়া প্রস্তুত। তবে সেটা হতে হবে ২০২২ সালের চুক্তি অনুযায়ী, যা বর্তমানে অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে। পুতিন বলেন, 'আলোচনার বিষয়টি আমরা কখনোই প্রত্যাখ্যান করিনি। তবে আলোচনা ক্ষণস্থায়ী চাহিদার ভিত্তিতে নয়, এটা হতে হবে ইস্তাম্বুলে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেটার ওপর ভিত্তি করে।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের আক্রমণ রাশিয়ার পূর্ব ইউক্রেনে অগ্রগতি থামাতে ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে কিয়েভের ফ্রন্টলাইন প্রতিরক্ষা দুর্বল হয়েছে, যা মস্কোর জন্য লাভজনক। পুতিন বলেন, রুশ বাহিনী ধীরে ধীরে কুরস্ক থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের হটিয়ে দিচ্ছে।
পুতিন আরও বলেন, 'রাশিয়ার মূল লক্ষ্য দোনবাসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়া। শত্রম্নর লক্ষ্য ছিল আমাদের মনোবল দুর্বল করা এবং আমাদের সেনা মোতায়েনের কৌশল বাধাগ্রস্ত করা। মূলত দোনবাসে আমাদের অগ্রগতি থামানো। কিন্তু তারা সফল হয়নি।'
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রম্নয়ারিতে ইউক্রেনে 'বিশেষ সামরিক অভিযান' শুরুর নির্দেশ দেওয়া পুতিন বলেন, এখন সশস্ত্র বাহিনীর 'পবিত্র দায়িত্ব' হলো কুরস্ক থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে হটিয়ে দেওয়া এবং রুশ নাগরিকদের রক্ষা করা।
এদিকে, ইউক্রেনের শীর্ষ সেনা কমান্ডার জেনারেল ওলেকসান্দ্র সিরস্কি জানিয়েছেন, কুরস্ক অভিযানের একটি উদ্দেশ্য ছিল রুশ বাহিনীকে অন্য এলাকা থেকে সরিয়ে আনা। বিশেষ করে পূর্ব ইউক্রেনের পোকরোভস্ক ও কুরাখোভ শহরগুলোর কাছে। যদিও কুরস্ক আক্রমণ পুতিন ও রুশ সামরিক নেতৃত্বের জন্য বিব্রতকর ছিল। তবে রুশ কর্মকর্তারা এখন এটিকে কিয়েভের বড় কৌশলগত ভুল হিসেবে হাজির করছেন। তাদের মতে, এতে ইউক্রেন হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করে সামান্য সাফল্য পেয়েছে।
পুতিন বলেন, 'শত্রম্ন আমাদের সীমান্ত এলাকায় তাদের বড় ও প্রশিক্ষিত ইউনিট পাঠিয়ে মূল এলাকায় নিজেদের দুর্বল করেছে, আর আমাদের বাহিনী দ্রম্নত অগ্রসর হতে পেরেছে।' আর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, কুরস্কে ইউক্রেনের অবস্থান ধরে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে এবং এটি তাদের বিজয় পরিকল্পনার একটি অংশ। কিন্তু পুতিন জানান, রুশ বাহিনী পূর্ব ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে আগের চেয়ে দ্রম্নত এলাকা দখল করছে এবং রাশিয়ায় সেনা মোতায়েন বাড়ছে। পুতিন আরও বলেন, 'আমাদের আক্রমণ ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। রুশ বাহিনী পূর্ব ইউক্রেনের পোকরোভস্ক শহরে সফলভাবে অগ্রসর হচ্ছে।'
রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের ১৮ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে এবং কিয়েভের ২০২৩ সালের পাল্টা আক্রমণ বড় ধরনের সাফল্য অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার পর রুশ বাহিনী পূর্ব ইউক্রেনে অগ্রসর হচ্ছে। যদিও ক্রেমলিন বলছে, ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি আলোচনার শর্ত এখনো তৈরি হয়নি।