শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

গাজায় থামছেই না ইসরাইলি তান্ডব, নিহত আরও ৪৮

যাযাদি ডেস্ক
  ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
গাজার দেইর আল-বালাহতে ইসরাইলি হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া একটি মসজিদের সামনে মঙ্গলবার তিন শিশু -রয়টার্স অনলাইন

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত আছে। অবরুদ্ধ ভূখন্ডটিতে দখলদার দেশটির হামলায় আরও ৪৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে প্রায় ১১ মাস ধরে চলা হামলায় নিহতের সংখ্যা পৌনে ৪১ হাজার ছাড়াল। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স, আনাদলু, বিবিসি

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ৭০ জন আহত হয়েছেন। উদ্ধারকর্মীরা যেতে না পারায় অনেকে এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। এ নিয়ে টানা হামলায় ৯৪ হাজার ২২৪ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলি হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইসরাইলি আগ্রাসন গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, এই বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচু্যত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সবাই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

ইসরাইল হামলা অব্যাহত রাখলে বন্দিরা

কফিনে ফেরত যাবে : হামাস

এদিকে, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের সশস্ত্র শাখা হামাস হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ইসরাইলি সামরিক আগ্রাসন অব্যাহত থাকলে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে আটক থাকা বন্দিরা কফিনে করে ফেরত যাবে। একইসঙ্গে ইসরাইলি সেনারা কাছে এগিয়ে গেলে কী করতে হবে, সে বিষয়ে বন্দিদের রক্ষায় নিয়োজিত যোদ্ধাদের 'নতুন নির্দেশনা' দেওয়া হয়েছে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে গোষ্ঠীটি।

গাজায় ইসরাইল ছয় বন্দির মরদেহ উদ্ধারের দু'দিন পর হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেডসের মুখপাত্র আবু উবেইদা সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, 'চুক্তিতে পৌঁছানোর পরিবর্তে সামরিক আগ্রাসনের মাধ্যমে তাদের মুক্ত করা বিষয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর জোর করার অর্থ হলো, তারা (বন্দিরা) কফিনে করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাবে। তাদের পরিবারকে তাদের মৃত বা জীবিত গ্রহণের মধ্যে যে কোনো একটিকে বেছে নিতে হবে।' বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, 'নেতানিয়াহু এবং সেনাবাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে বন্দিদের বিনিময় চুক্তিতে বাধা দিয়েছে এবং বন্দিদের মৃতু্যর জন্য তারাই সম্পূর্ণরূপে দায়ী।'

'জিম্মি' মৃতু্যর জন্য ক্ষমা চাইলেন নেতানিয়াহু

এদিকে, তুমুল বিক্ষোভের মুখে ইসরাইলিদের কাছে 'ক্ষমা' চেয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে ছয় বন্দিকে (ইসরাইল যাদের জিম্মি বলছে) জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য নেতানিয়াহু ক্ষমা চান।

ইসরাইল জুড়ে দুই দিনের নজিরবিহীন গণবিক্ষোভের পর সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) জনগণের উদ্দেশে দেওয়া প্রথম ভাষণে নেতানিয়াহু বলেন, 'জিম্মিদের মুক্ত করতে আমার চেয়ে বেশি প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ কেউ নয়।'

গত শনিবার ইসরাইলি সেনারা দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় একটি সুড়ঙ্গ থেকে ছয় বন্দির মরদেহ উদ্ধার করে। তাদের মধ্যে একজন আমেরিকার দ্বৈত নাগরিকও ছিলেন। এই ঘটনার পর ইসরাইল জুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রধান ট্রেড ইউনিয়ন 'হিস্ত্রাদ্রট' দেশজুড়ে ব্যাপক ধর্মঘট পালন করে। যার ফলে তেল আবিবসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহর কার্যত অচল হয়ে পড়ে। বিক্ষোভের মূল কারণ হলো, ইসরাইল সরকারের পক্ষ থেকে বন্দিদের মুক্তির জন্য অবিলম্বে চুক্তির দাবির ক্ষেত্রে ব্যর্থতা।

উলেস্নখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় হামাস। সে সময় ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে