ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামাসের কাছে জিম্মি ছয়জনের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে ইসরাইল। সেখানে মার্কিন এক নাগরিকের মরদেহও রয়েছে। এক বিবৃতিতে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, রাফাহ এলাকায় ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গের ভেতর শনিবার ওইসব মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়। আইডিএফ জানিয়েছে, ইসরাইলি এসব জিম্মিকে কয়েকদিন আগেই হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রোববার দেওয়া ওই বিবৃতিতে আইডিএফ মরদেহগুলো ইসরাইলের ভূখন্ডে ফিরিয়ে নেওয়ার কথাও জানিয়েছে। তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইসরাইল
আইডিএফ বলেছে, তাদের সবাইকে গত বছর ৭ অক্টোবর জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং হামাস গাজা উপত্যকায় তাদের হত্যা করেছে। নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে বলেও ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করে হামাস। জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় ২৫১ জনকে। ওই হামলার প্রতিশোধ নিতে সেদিন থেকেই গাজায় তীব্র হামলা শুরু করে আইডিএফ। ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার ৭০০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। অন্য জিম্মিদের মুক্তির জন্য আমেরিকা, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু কয়েক মাস ধরে চেষ্টার পরও এখন পর্যন্ত কোনো সাফল্য আসেনি। এ জন্য হামাস ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে দায়ী করছে।
এদিকে, ছয় জিম্মির মরদেহ পাওয়ার পর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন সাধারণ ইসরাইলিরা। জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের সংগঠন রোববার সকালে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন। তারা বলেন, নেতানিয়াহু যদি হামাসের সঙ্গে চুক্তি করতেন, তাহলে এই ছয়জনকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যেত। কারণ তারা কয়েকদিন আগেও জীবিত ছিলেন।
ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধী দলীয় নেতা ইয়ার লাপিদও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নেতানিয়াহু ও তার মৃত মন্ত্রিপরিষদের কারণে জিম্মিরা জীবিত ফিরতে পারেননি।
ছয় জিম্মির মরদেহ উদ্ধারের পর চাপে পড়ে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন নেতানিয়াহু। তিনি দাবি করেছেন, গত ডিসেম্বর থেকেই হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন তিনি। কিন্তু হামাস রাজি হচ্ছে না। তিনি বলেছেন, গত ১৬ আগস্টও আমেরিকার দেওয়া নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছিল ইসরাইল। কিন্তু হামাস এতে রাজি হয়নি। নেতানিয়াহু বলেছেন, 'যারা জিম্মিদের হত্যা করে তারাই যুদ্ধবিরতি চায় না।' তবে তা সত্ত্বেও হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন যুদ্ধাপরাধের অপরাধে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু।
তবে, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইজ্জত আল-রেশিক বলেছেন, এসব মৃতু্যর জন্য যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করা ইসরাইল দায়ী।