যুদ্ধবিরতির আগে নতুন করে গাজা ভূখন্ডে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি সেনারা। শুক্রবার উত্তরে জাবালিয়া থেকে দক্ষিণের খান ইউনিস পর্যন্ত গাজা ভূখন্ডের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে হামাসের যোদ্ধাদের সন্ধানে অভিযান চালায় ইসরাইলি বাহিনী। স্বাধীনতাপন্থি ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরাইলি হামলার অন্তত ১২ জন সাধারণ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আর শনিবার নুসেইরাতে বিমান হামলায় ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। উলেস্নখ্য, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দক্ষিণের খান ইউনিস ও মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় সামরিক অভিযান সমাপ্ত করার ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইল। মাসব্যাপী অভিযান শেষে এই দুই শহর পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দিয়েছে দখলদার সেনাবাহিনী। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম বলছে, ধ্বংস করার মতো কিছুই আর নেই এই দুই শহরে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স, আল-জাজিরা, এএফপি
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এবং মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় শুক্রবার রাতে সামরিক অভিযান শেষ করার কথা ঘোষণা করে ইসরাইলি বাহিনী। ওই দুই এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। তেল আবিবের দাবি, গত দুই মাসে ওই এলাকায় আড়াইশর বেশি হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে তারা। এ ছাড়া হামাসের ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সুড়ঙ্গপথ ধ্বংস করে উদ্ধার করা হয়েছে ছয় জিম্মির মরদেহ।
ইসরাইল আরও জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় যেসব ফিলিস্তিনিকে শহর ছাড়তে বলা হয়েছিল, তারা এখন ফিরতে পারবে। এর মধ্য দিয়ে খান ইউনিস ও দেইর আল-বালাহ আবারও 'নিরাপদ মানবিক অঞ্চলে' পরিণত হলো। খান ইউনিস ও দেইর আল-বালাহ থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া সেনারা এবার গাজা উপত্যকার অন্য এলাকায় অভিযানে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
গাজায় ত্রাণের বহরে ইসরাইলের
হামলায় চার ফিলিস্তিনি নিহত
এদিকে, গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণের বহরে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এ হামলায় চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আমেরিকা ভিত্তিক ত্রাণ সংস্থা আনরোয়া। শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ গাজার রাফাহতে আমিরাতের রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হওয়া আনরোয়ার ত্রাণবহরের প্রথম গাড়িতে ছিলেন ওই চার ফিলিস্তিনি।
ইসরাইলের দাবি, আমেরিকাভিত্তিক ত্রাণ সংস্থা আনরোয়ার গাড়িবহরে 'সশস্ত্র হামলাকারী' ছিল, যদিও সংস্থাটি সেটা অস্বীকার করেছে। সংস্থাটি জানায়, ইসরাইল বিমান হামলার আগে সতর্ক করেনি। তবে এতে সংস্থাটির কোনো কর্মী আহত হননি বলে নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি। আনরোয়া আরও জানায়, ওই চারজন নিহত হওয়ার পর দলের বাকি সদস্য ত্রাণ পৌঁছে দেন।
হামলার বিষয়ে মন্তব্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী ও ওয়াশিংটনে ইসরাইলি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এর আগেও ইসরাইল-গাজা যুদ্ধে সাহায্য ও মানবিক সহায়তা সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত এপ্রিলে ত্রাণবাহী গাড়িবহরে ইসরাইলের তিনটি হামলায় 'ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন'র সাত কর্মী নিহত হন।