রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে তুমুল লড়াই
ইউক্রেনের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত, পাইলট নিহত
প্রকাশ | ৩১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় পোকরোভস্কে রুশ বাহিনীর সঙ্গে তুমুল লড়াই চলছে। বৃহস্পতিবার রাতে এই তথ্য জানিয়েছেন দেশটির শীর্ষ কমান্ডার ওলেক্সান্ডার সিরস্কি। সেখানে তিনি বেশ কয়েক দিন কাটিয়েছেন এবং সেখানকার যুদ্ধকে 'বেশ কঠিন' বলে বর্ণনা করেছেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পোকরোভস্কের কৌশলগত কেন্দ্রের দিকে চাপ বাড়িয়েছে রাশিয়া। সেখানে রুশ সেনারা ক্রমাগতভাবে এগিয়ে চলেছে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স
গত ৬ আগস্ট রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কুরস্ক অঞ্চলে আকস্মিকভাবে ইউক্রেনের অনুপ্রবেশের পর সেখানে হামলার মাত্রা আর কমেনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, পোকরোভস্কের কাছে পরিস্থিতি 'বেশ কঠিন' হয়ে পড়েছে। তবে কিয়েভে তার অবস্থান আরও শক্তিশালী করবে বলে আশাবাদী তিনি।
বৃহস্পতিবার 'টেলিগ্রামে' জেলেনস্কি বলেছিলেন, একটি বৈঠকের সময় শীর্ষ সামরিক বাহিনী তাকে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছিল। বৈঠকে প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা হয়। তিনি আরও জানান, ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত দূরপালস্নার অস্ত্রগুলো নিয়ে একটি পৃথক বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছিল। একইসঙ্গে কুরস্ক আক্রমণ নিয়েও আলোচনা হয়। জেলেনস্কি বলেন, 'অভিযানের কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।'
কমান্ডার সিরস্কি ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, 'কঠিন যুদ্ধ চলছে। শত্রম্নরা (রাশিয়া) যা কিছু সরানো যায় এবং যেদিকে অগ্রসর হতে পারে, সেখানেই আক্রমণ করে আমাদের প্রতিরক্ষা ভেদ করার চেষ্টা করছে।' তিনি বলেন, পোকরোভস্ক শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে ক্রাসনি ইয়ার এলাকায় সবচেয়ে তীব্র সংঘর্ষ হচ্ছে। সিরস্কি আরও বলেন, হরদিভকা গ্রামের পূর্ব উপকণ্ঠেও তীব্র আক্রমণ শুরু হয়েছে। শহরটি কোস্তিয়ান্তিনিভকার সঙ্গে সংযোগকারী কৌশলগত পথ থেকে ৯ কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে অবস্থিত। ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ বলেন, সকাল থেকে পোকরোভস্কের সামনের সারিতে ২৩টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
ইউক্রেনের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান
বিধ্বস্ত, পাইলট নিহত
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়েছে আমেরিকা। এর মধ্যে একটি বিমান গত সোমবার বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে বিমানটি রাশিয়ার হামলায় বিধ্বস্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এর বদলে পাইলটের ভুলে বিমানটি মাটিতে আছড়ে পড়ে। এ ঘটনায় যুদ্ধবিমানটির পাইলটও নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৬ আগস্ট) এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ইউক্রেনে চলতি মাসে আমেরিকার তৈরি বিমানের চালান আসার পর প্রথম এই ধরনের ক্ষতির খবর পাওয়া গেল।
ইউক্রেনীয় জেনারেল স্টাফ বৃহস্পতিবার ফেসবুক পোস্টে জানান, রুশ লক্ষ্যবস্তুর কাছে যাওয়ার সময় যুদ্ধবিমানটি নেমে এসে ভূমিতে বিধ্বস্ত হয় এবং এর পাইলট মারা যান। ওই পোস্টে আরও বলা হয়, বিধ্বস্ত হওয়ার আগে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানটি 'উচ্চ দক্ষতা দেখিয়েছে' এবং চারটি রুশ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে।
ইউক্রেন বলেছে, রাশিয়া সেদিন দেশটির জ্বালানি খাতকে লক্ষ্য করে ২০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করেছিল। একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'পরবর্তী লক্ষ্যের কাছে যাওয়ার সময় একটি বিমানের সঙ্গে আমাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে দেখা যায়, বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং পাইলট মারা গেছেন।'
এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, সোমবারের দুর্ঘটনাটি রাশিয়ার হামলার কারণে হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। পাইলটের ত্রম্নটি থেকে যান্ত্রিক ব্যর্থতাসহ সম্ভাব্য কারণগুলো নিয়ে এখনো তদন্ত হচ্ছে।
ইউক্রেন তার নতুন নৌবহরের আকার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। যদিও এই ঘটনায় একটি উলেস্নখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। উলেস্নখ্য, ইউক্রেনের হাতে মোট ছয়টি যুদ্ধবিমান ছিল। গত ৪ আগস্ট প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, ইউক্রেনের কাছে এফ-১৬ বা পর্যাপ্ত যুদ্ধবিমান ব্যবহার করার জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত পাইলট ছিল না।