জলাধারের মুখ খোলার খেসারত

ভারতের গুজরাটে ভয়াবহ বন্যা :নিহত ২৯

নদী থেকে গুজরাটের শহরে ঢুকেছে কুমির, তটস্থ বানভাসিরা

প্রকাশ | ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় বিপর্যস্ত ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাট। এই দুর্যোগে এরই মধ্যে সেখানে অন্তত ২৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। বন্যার পানিতে পস্নাবিত গুজরাটের ভদোদরা শহরের ছবিটি তোলা হয়েছে বৃহস্পতিবার -টাইমস অব ইনডিয়া
ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় বিপর্যস্ত ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাট। এই দুর্যোগে এরই মধ্যে সেখানে অন্তত ২৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষকে। তবে সহসাই এই বিপদ কাটছে না গুজরাটবাসীর। রাজ্যটিতে আরও কিছুদিন ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি)। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি আগামী ৩০ আগস্ট পর্যন্ত গুজরাটে ভারী বৃষ্টির জন্য সতর্কতা জারি করেছে আইএমডি। বিশেষ করে, গতকাল সৌরাষ্ট্র জেলার বিভিন্ন অংশে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃষ্টি-বন্যাজনিত কারণে রাজ্যটিতে এ পর্যন্ত ২৯ জন মারা গেছেন। ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন ১৮ হাজারের বেশি মানুষ। জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও উপকূলরক্ষী বাহিনী উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণের কাজে যুক্ত হয়েছে। তবে বন্যাকবলিত এলাকা থেকে এখনো বহু মানুষকে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। ক্ষুধার্ত এসব মানুষ বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়ে আছেন। কিন্তু টানা বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। নিরাপদ থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে তাদের। আজওয়া ও প্রতাপপুরা জলাধার থেকে বিশ্বামিত্রী নদীতে পানি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে নিম্নধারার (ডাউনস্ট্রিম) এলাকাগুলোতে বন্যা দেখা দিয়েছে। ভাদোদরার কিছু অংশ এবং নদীর তীরবর্তী অন্যান্য শহর ও গ্রামগুলো ১০-১২ ফুট পানির নিচে চলে গেছে। এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজ্যের ১৪০টি জলাধার ও বাঁধ এবং ২৪টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জাতীয় ও রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী ছাড়াও সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং কোস্টগার্ডকে উদ্ধার ও ত্রাণ কাজের জন্য ডাকা হয়েছে। গতকাল সকালে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুশিকেশ প্যাটেল বলেছেন, সরকার বন্যার পানি বিশ্বামিত্রী নদীতে ছাড়ার পরিবর্তে নর্মদা খালে সরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে। নদী থেকে গুজরাটের শহরে ঢুকছে কুমির! এদিকে, এই বন্যার মধ্যে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে কুমির! একটি নয়, একাধিক। কারও মুখে মরা জীবজন্তু, তো কেউ খাবারের খোঁজে হন্য হয়ে এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভারতের গুজরাটের বরোদা শহরে বন্যা পরিস্থিতির চিত্র এটি। কুমিরের আতঙ্কেও ভুগছেন সেখানকার বানভাসিরা। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, নদীর পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। পাশাপাশি বিশ্বামিত্রি নদী থেকে একাধিক কুমিরও ঢুকে পড়েছে জনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ জনগণের মধ্যে। বিশ্বামিত্রি নদী বরোদা শহরের মাঝ বরাবর বয়ে গেছে। প্রবল বৃষ্টির কারণে বর্তমানে নদীর পানি বিপৎসীমার ৯ ফুট ওপর দিয়ে বইছে। এর ফলে নদীর পানি ঢুকে পড়েছে বরোদা এবং আশপাশের নিচু এলাকাগুলোতে। সেই পানির সঙ্গেই ঢুকেছে নদীর অনেক কুমিরও। বরোদা শহর এবং আশপাশের লোকালয়ে কুমির ঘুরে বেড়ানোর বেশ কয়েকটি ভিডিও এরই মধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে সমাজ মাধ্যমে। এর মধ্যে একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মুখে মরা কুকুর নিয়ে বরোদার রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি কুমির। আবার একটি কুমির ভেসে যাওয়া একটি নিচু বাড়ির ছাদে উঠে পড়েছে। ফলে বন্যার পাশাপাশি কুমিরের আতঙ্কেও তটস্থ সবাই। পস্নাবিত এলাকাগুলোতে বসবাসকারী বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, কুমিরের ভয়ে ঘরের ভেতরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।