ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে ইসরাইলি হামলায় আরও ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪০ হাজার ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৯৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। গাজা ভূখন্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিরামহীন এই হামলায় আরও অন্তত ৯৩ হাজার ৪৬৮ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন। তথ্যসূত্র : আনাদোলু, আল-জাজিরা, রয়টার্স
মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ৭১ জন নিহত এবং আরও ১১২ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন, কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
অন্যদিকে, চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছেন, রোববার গাজাজুড়ে এসব হামলা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, অ্যাম্বুলেন্স এবং সিভিল ডিফেন্স ক্রুরাও তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারের বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরাইল অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় এবারও অগ্রগতি হয়নি
এদিকে, গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অধরাই রয়ে গেছে। রোববার (২৫ আগস্ট) কায়রোয় অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বৈঠকে মধ্যস্থতাকারীদের কোনো প্রস্তাবেই সম্মত হয়নি হামাস ও ইসরাইল। মিসরীয় নিরাপত্তা বাহিনীর দুটি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অবশ্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা এবারের আলোচনাকে 'গঠনমূলক' বলে উলেস্নখ করেছেন। তার মতে, চূড়ান্ত ও বাস্তবায়নযোগ্য চুক্তি নিশ্চিত করতে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। তিনি আরও বলেছেন, আলোচনাকারীরা কায়রোয় আরও কয়েকদিন অবস্থান করবেন। সামনের দিনগুলোতে বাদবাকি বিষয় নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
গাজায় সংকট নিরসনে কয়েক মাস ধরে চলা অনিয়মিত আলোচনা কোনো সাফল্য নিয়ে আসতে পারেনি। সমঝোতায় যেসব বিষয় বাধা হয়ে আছে তার মধ্যে একটি ফিলাডেলফি করিডোরে ইসরাইলি বাহিনীর অবস্থান। এটি গাজার দক্ষিণাঞ্চল ও মিসর সীমান্তে ১৪ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি পথ। হামাসের অভিযোগ, করিডোর থেকে সেনা প্রত্যাহারের অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে ইসরাইল।
গাজা উপত্যকা বিভক্তকারী ফিলাডেলফি ও নেতজারিম করিডোরের বিকল্প বেশকিছু প্রস্তাব মধ্যস্থতাকারীরা উপস্থাপন করেছিলেন। কিন্তু একটিও দুই পক্ষের মনঃপুত হয়নি বলে মিসরীয় সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া ইসরাইলি বাহিনীর হাতে বন্দি কিছু ফিলিস্তিনির মুক্তি নিয়েও শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গাজা ত্যাগ করার শর্তে তাদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছেন।
ওই মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, বৃহস্পতিবার থেকে ইসরাইল, আমেরিকা ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অনেক আলোচনা হয়েছে। কাতার ও মিসরের আলোচনাকারীদের সঙ্গে হামাসের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিদের বৈঠক সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার ভিত্তি তৈরি করতে তারা সচেষ্ট ছিলেন।