লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। দাবানলে এখন পর্যন্ত দুইজনের মৃতু্য হয়েছে এবং ৩০টি শহরে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া দাবানলের কারণে দেশটির বহু মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। তথ্যসূত্র : বিবিসি, এএফপি
দাবানল মোকাবিলা করার জন্য ব্রাজিলের সাও পাওলো প্রাদেশিক সরকার একটি 'ক্রাইসিস ক্যাবিনেট' গঠন করেছে। এ ছাড়া দাবানলের কারণে ব্রাজিলের ৩০টি শহরকে উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে। আগুনে দুইজনের মৃতু্য হয়েছে এবং আগুনের জেরে সৃষ্ট ধোঁয়া এক ডজন মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত করেছে। এ ছাড়া রাজধানী সাও পাওলো শহরটি ধূসর কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে।
ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং কম আর্দ্রতা সেখানে বিপজ্জনক আগুনের পরিস্থিতি তৈরি করছে। এই অঞ্চল দীর্ঘকাল ধরে খরার মধ্যে রয়েছে। স্থানীয় সরকার জানিয়েছে, উরুপেস শহরের একটি শিল্প কারখানার দুই কর্মচারী শুক্রবার আগুন নেভানোর সময় মারা গেছেন। তবে এ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়নি। ব্রাজিল সম্প্রতি প্যান্টানাল জলাভূমিতে বিশাল দাবানল এবং রিও গ্র্যান্ডে ডো সুল প্রদেশে বড় বন্যার সম্মুখীন হয়েছে। প্রাদেশিক সরকার সতর্ক করে বলেছে, বনের দাবানল দমকা বাতাস থেকে আরও দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং সম্ভাব্য প্রাকৃতিক গাছপালাগুলোর পাশাপাশি বিশাল এলাকাও ধ্বংস করতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়াতে দেওয়া এক বার্তায় গভর্নর টারসিসিও ডি ফ্রেইটাস বলেছেন, 'বর্তমানে আমাদের ৩০টি শহরে বড় ধরনের অগ্নিকান্ডের জন্য উচ্চ সতর্কতা জারি রয়েছে এবং আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি।'
পরে পৃথক এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, 'সাও পাওলো একটি কঠিন সময়ের মুখোমুখি হয়েছে এবং বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে কাজে যোগ দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে এবং মানুষকে নিরাপদ রাখতে আমরা প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ।'
এদিকে, রাজধানী সাও পাওলো ঘন ধূসর কুয়াশায় ঢেকে গেছে। সরকার এক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছে, 'দমকা বাতাসের সঙ্গে আগুন দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এসব আগুন ঘন এবং বিষাক্ত ধোঁয়া নির্গত করে, যা পরিবেশ এবং মানব স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে এবং এর ফলে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা ও কার্ডিওভাসকুলার রোগ হয়।'
চার লাখ ৮০ হাজার বাসিন্দার শহর সাও জোসে ডো রিও প্রেটোতে পরিস্থিতি গুরুতর। এই শহরে সাম্প্রতিক দিনগুলিতে ৩৩৫টির বেশি অগ্নিকান্ডের ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং এসব অগ্নিকান্ডের সময় স্কুল বন্ধ করতেও বাধ্য হয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
গত জুন মাসে প্যান্টানাল জলাভূমিতে বিশাল দাবানলের মতো সম্প্রতি ব্রাজিল বেশ কয়েকটি চরম দুর্যোগের শিকার হয়েছে। গত জুনের ওই দাবানলের সময় জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, চলতি বছরের দাবানল মৌসুমের আগেই শুরু হয়েছে এবং এটি আগের বছরের তুলনায় ছিল আরও তীব্র।