নিহত ৪৮

গাজায় রাতভর তান্ডব ইসরাইলের

ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে ৩০ দফা হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী তাদের লক্ষ্য করে তিন ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর পাল্টা হামলা

প্রকাশ | ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
গাজার খান ইউনিসে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া একটি ভবন থেকে মরদেহ উদ্ধার করছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবিটি শনিবার তোলা -রয়টার্স অনলাইন
একদিকে যুদ্ধবিরতির আলোচনার কথা বলা হচ্ছে, অন্যদিকে গাজায় বিরামহীন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। শনিবারও রাতভর তান্ডব চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে কমপক্ষে ৪৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আর গত দুই দিনে নিহত হয়েছেন ৬৯ জন। এর মধ্যে অধিকাংশই দক্ষিণ এবং মধ্য গাজার বাসিন্দা। বেশ কিছু মেডিকেল সূত্র নিশ্চিত করেছেন, নিহতদের মধ্যে ৩২ জনের মরদেহ খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স, এএফপি এদিকে, গাজার উত্তরাঞ্চলের আশপাশ থেকে লোকজনকে অন্যত্র সরে যাওয়ার জন্য নতুন করে নির্দেশনা দিয়েছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। গাজার উত্তর, মধ্য এবং দক্ষিণাঞ্চলে আরও আগ্রাসী হামলা শুরু করেছে ইসরাইলি বাহিনী। জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলছেন, এই সংঘাতের কারণে ?সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হচ্ছে ফিলিস্তিনি শিশুদের। গাজা উপত্যকায় গুরুতর মানবিক সহায়তা সংকট দেখা দিয়েছে এবং সেখানে ভয়াবহ অপুষ্টি শিকার হচ্ছে শিশুরা। গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালানো শুরু করে ইসরাইল। প্রায় ১০ মাস ধরে অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। মাসের পর মাস ধরে চলা এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪০ হাজার ২৬৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৯৩ হাজার ১৪৪ ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। ইসরাইলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা তিন ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর ইসরাইলি বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনের তিনটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। স্থানীয় সময় শুক্রবার গাজা সিটির জেইতুন এলাকায় এসব হামলা চালানো হয়। যুদ্ধবিষয়ক একটি পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, হামাসের সঙ্গে যৌথভাবে হামলা চালিয়েছে প্যালেস্টাইন ইসলামিক জিহাদ এবং আল-আকসা মার্টিয়ার্স ব্রিগেডস। পর্যবেক্ষণ সংস্থাটি জানিয়েছে, ইসরাইলি সেনাদের লক্ষ্য করে রকেট ও মর্টার দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। এদিকে, গাজা শহরের দক্ষিণে নেটজারিম করিডোরে একটি ইসরাইলি কমান্ড ও কন্ট্রোল সেন্টারে সশস্ত্র ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে হামাস। এর আগে গত ১৫ আগস্ট ইসরাইলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়। আমেরিকাভিত্তিক প্রতিরক্ষা থিংক ট্যাংক দি ইন্সটিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার (আইএসডাবিস্নউ) এবং ক্রিটিকাল থ্রেটস প্রজেক্ট (সিটিপি) অনুসারে, ইসরাইলি স্থলবাহিনী দক্ষিণ ও মধ্য গাজার খান ইউনিস এবং দেইর আল-বালাহের গভীরে অগ্রসর হয়েছে এবং যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। রাফাহ শহরের কাছেও লড়াই অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে প্রায় ৩০ দফা হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। অপরদিকে, ইসরাইলি ভূখন্ডে কমপক্ষে পাঁচ দফা রকেট ও মর্টার হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা। ইসরাইলের আশকেলন, আশদোদ এবং জিকিম ও কিসুফিম এলাকায় এসব হামলা চালানো হয়। এর আগে ইসরাইলের সামরিক ঘাঁটিতে সরাসরি হামলার দাবি করে হিজবুলস্নাহ। লেবাননভিত্তিক এই সশস্ত্র সংগঠন জানিয়েছে, তারা উত্তর ইসরাইলের রামোট নাফতালি এলাকায় ইসরাইলি সামরিক ব্যারাক এবং অধিকৃত গোলান মালভূমির জাউরাতে বেশ কিছু আর্টিলারি সাইটে কাতিউশা রকেট দিয়ে হামলা চালিয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে ওই দুই স্থানে হামলা চালানো হয়। হিজবুলস্নাহর দাবি এসব স্থানে তাদের রকেট সরাসরি আঘাত হেনেছে। ্র হামাসের প্রতিনিধিদল কায়রো যাবে কিন্তু আলোচনায় অংশ নেবে না ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলাকালে তাদের প্রতিনিধিদল মিসরের রাজধানী কায়রো যাবে। কিন্তু তারা সেখানে গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অংশ নেবে না। হামাসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা শুক্রবার বলেছেন, প্রতিনিধিদল শনিবার কায়রো যাবে। সেখানে তারা মিসরের সিনিয়র গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের গাজা যুদ্ধবিরতির চলমান আলোচনার অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করবে। কিন্তু এর মানে এই নয়, তারা আলোচনায় অংশ নেবেন।