চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যা
আরজি করে নিরাপত্তা দেবে কেন্দ্রীয় বাহিনী :ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
'এ ঘটনা জাতির বিবেককে স্তম্ভিত করেছে'
প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
এবার কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজের নিরাপত্তার দায়িত্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি করের মামলার শুনানি ছিল। ওই শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, 'আমরা আরজি কর হাসপাতালে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করছি।' মঙ্গলবার শুনানির প্রথম দিনে আদালত বলেছে, 'এ ঘটনা জাতির বিবেককে স্তম্ভিত করেছে।' ঘটনার তদন্ত চালানো নিয়ে কর্তৃপক্ষের সমালোচনাও করেছে আদালত। চিকিৎসকরা যেন আবার কাজে ফিরতে পারেন তাই এমন সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি
আরজি করে সিআইএসএফ মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিআইএসএফ এমন বাহিনী, যারা বিমানবন্দর, কয়লাখনির মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে। ভোটের সময়ও এই বাহিনী মোতায়েন করা হয়। আরজি করে সিআইএসএফ মোতায়েনের নির্দেশ দিয়ে ওই হাসপাতালের নিরাপত্তাকেও গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে উন্নীত করা হলো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শিক্ষানবিশ নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। বিক্ষোভ চলছে হাসপাতাল চত্বরে। সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আন্দোলনকারীরা যেমন ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় বিচারের দাবি তুলছেন, তেমনই নিরাপত্তা সুনিশ্চিতের কথাও বলছেন। শুধু আরজি করে নয়, আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে। দিলিস্নর এইমম-সহ বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মবিরতি চলছে। তবে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের এবার কাজে ফেরার অনুরোধ করেছেন প্রধান বিচারপতি।
মঙ্গলবার আরজি কর মামলার শুনানিতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশ-প্রশাসন। শহরজুড়ে মেয়েদের 'রাত দখল' কর্মসূচি চলাকালে একদল দুর্বৃত্ত আরজি করে হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। সে সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর করা হয়। সেই ঘটনার পর নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। মঙ্গলবারের শুনানিতে বিষয়টি উত্থাপন করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ও। তিনি বলেন, 'আমরা খুবই চিন্তিত। প্রতিবাদকারীদের বাধা দিতে বলপ্রয়োগ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। আমরা কিছুতেই বুঝতে পারছি না, স্বাধীনতা দিবসের দিন রাজ্য কীভাবে হাসপাতাল ভাঙচুর করতে দিল?'
এদিনের শুনানিতে চিকিৎসকদের পক্ষের আইনজীবীরা আরজি করে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানান। তাদের বক্তব্য, গত ১৪ আগস্ট যে তান্ডব চলেছে, তারপর থেকেই হাসপাতালে কাজ করতে ভয় পাচ্ছেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা। এরপরই পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশও করেন প্রধান বিচারপতি। তার মন্তব্য, পুলিশ নিরাপত্তা দিতে না পেরে পালিয়ে গেছে। এরপরই সলিসিটর জেনারেলকে আরজি করে পর্যাপ্ত সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি।
এদিকে, আরজি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর সামাজিক মাধ্যম 'এক্সে' এক পোস্টে কুণাল লিখেছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীতে আপত্তি নেই তৃণমূলের।
একই সঙ্গে আরজি করে হামলার নেপথ্যে 'রাম-বাম আঁতাত'কেই দায়ী করেছেন তিনি। কুণাল বলেন, রাম-বাম অপশক্তির প্ররোচনা, উসকানি যদি ওদের বাহিনী সামলাতে চায়, তবে তা সামলাক। তাতে তৃণমূলের কোনো আপত্তি নেই।