রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লিপেতস্কে বড় ধরনের ড্রোন হামলার কথা জানিয়েছেন সেখানের আঞ্চলিক গভর্নর। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এদিকে, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী নিশ্চিত করে জানিয়েছে, রাশিয়ার ওই এলাকার বিমানঘাঁটিতে হামলা করা হয়েছে। ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ 'টেলিগ্রামে' একটি পোস্টে বলেছেন, গোলাবারুদের গুদাম ও অন্যান্য সুবধায় গাইডেড এরিয়াল বোমা দিয়ে হামলা করা হয়েছে। এতে সেখানে বিস্ফোরণ ও একটি বড় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে, রাশিয়াও পাল্টা হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ১০ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার এই হামলা হয়েছে। তথ্যসূত্র : এএফপি, আল-জাজিরা, রয়টার্স, বিবিসি
এর আগে, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়ার এসইউ-৩৪, এসইউ-৩৫ ও মিগ-৩১ যুদ্ধবিমান লিপেতস্ক বিমানঘাঁটিতে ছিল। একটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, হামলাটি চালানো হয়েছিল ড্রোন দিয়ে। বিমানঘাঁটিতে তখন কয়েক ডজন বিমান এবং হেলিকপ্টার দাঁড়িয়ে ছিল। আরও ছিল ৭০০ গাইডেড বোমার একটি গুদামও। সেখানে এই হামলায় কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নির্ধারণ করা হচ্ছে।
'ইন্টারফ্যাক্স' বার্তা সংস্থা স্থানীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, বিমানঘাঁটিতে আগুন ধরে গিয়েছিল। বেশিরভাগ বিমানই ওড়ার সময় পায়নি বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের একটি সূত্র। এই সূত্রটি আরও জানিয়েছে, আগস্টের শুরুতে রাশিয়ার মোরোজোভস্ক বিমানঘাঁটি ধ্বংস করেছে ইউক্রেন, যে ঘাঁটিতে ছিল গাইডেড বোমা ও যুদ্ধবিমান।
লিপেতস্কের গভর্নর ইগর আর্টামনভ বলেছেন, হামলায় অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। তাছাড়া বন্ধ রয়েছে বিদু্যৎ সরবরাহ। সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে শত শত মানুষকে। তবে রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অন্তত ১৯টি ড্রোনকে ভূপাতিত করা হয়েছে।
গত শনিবার ইউক্রেন বলেছিল, তারা মোরোজোভস্কের বিমানঘাঁটির গোলাবারুদের ডিপোতে আঘাত হেনেছে, যেখানে রাশিয়া বাহিনী গাইডেড এরিয়াল বোমা ও অন্যান্য অস্ত্র মজুত করে রাখে এবং জ্বালানির মজুতও আছে। ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর প্রধান বলেছেন, ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভ্রাম্যমাণ ব্যবস্থা, বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিটের যৌথ প্রচেষ্টায় ড্রোনগুলো ধ্বংস করা হয়। কিয়েভ, পোলতাভা, সুমি, মাইকোলাইভ, খেরসন, দোনেস্ক ও দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের এসব ঘটনা ঘটে।
পূর্ব ইউক্রেনে রুশ হামলায় নিহত ১০
এদিকে, পাল্টা হিসেবে রাশিয়াও হামলা চালিয়েছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, পূর্ব ইউক্রেনের কস্তিয়ান্তিনিভকা শহরের একটি সুপারমার্কেটে রুশ হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছেন। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইগো ক্লিমেঙ্কো হতাহতের তথ্য জানিয়েছেন। ইগর ক্লিমেঙ্কো টেলিগ্রামে প্রকাশিত একটি পোস্টে জানান, শুক্রবার ১০ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছেন। তিনি ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের ওপর অগ্নিনির্বাপকের কাজের ছবি প্রকাশ করেছেন। বহু এলাকায় কালো ধোঁয়ার কুন্ডলী উঠছিল এবং পুলিশ আশপাশের সড়কগুলো ঘিরে রেখেছে। ড্রোন ও কামানের হামলার হামলার পর শহরের আশপাশের এলাকা থেকে মানুষজন পালিয়ে যেতে দেখেছেন। শহরটি রুশ সেনার অবস্থান থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং এখানে প্রায় প্রতিদিন হামলা হয়।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি টেলিগ্রামে লিখেছেন, এই সন্ত্রাসের জন্য রাশিয়াকে দায়ী করা হবে।