এবার হামাসের নতুন প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে নিশ্চিহ্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বুধবার ইসরাইলের একটি সামরিক ঘাঁটি সফরের সময় এই ঘোষণা দেন তিনি। সিনওয়ারের নাম উচ্চারণ না করে নেতানিয়াহু বলেন, 'আমরা নিজেদের, নিজেদের দেশকে রক্ষা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যারা আমাদের ধ্বংস চায়, তাদের আমরা নিশ্চিহ্ন করে দেব। রক্ষণাত্মক বা আক্রমণাত্মক, যে কোনো ভাবে শত্রম্নকে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে।' তথ্যসূত্র : এএফপি, রয়টার্স, আল-জাজিরা
প্রসঙ্গত, হামাস রাজনৈতিক মতাদর্শগত দিক থেকে ইসরাইলকে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করার পক্ষে। দীর্ঘদিন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী এই সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীটির শীর্ষ নেতা ছিলেন ইসমাইল হানিয়া। গত ৩১ জুলাই তেহরানে এক বোমা হামলায় নিহত হন তিনি। হানিয়ার নিহতের দায় এখনো কেউ স্বীকার করেনি। তবে তার হত্যার সঙ্গে যে ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ জড়িত, সে সম্পর্কে নিশ্চিত প্রায় সবাই।
গাজার শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের একাংশ কাতারে, একাংশ লেবাননে এবং বাকিরা গাজায় অবস্থান করছেন। ইয়াহিয়া সিনওয়ার হামাসের গাজা শাখার প্রধান ছিলেন। গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ভূখন্ডে যে হামলা চালানো হয়েছিল, তার মূল পরিকল্পনাকারীও ছিলেন সিনওয়ার। হানিয়া নিহত হওয়ার পর ৬১ বছর বয়সি সিনওয়ারকে নতুন শীর্ষ নেতা হিসেবে বেছে নিয়েছে হামাস।
তবে সিনওয়ারের এই পদোন্নতি গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি সংলাপকে আরও সংকটের মধ্যে ফেলেছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের একাংশ।
হানিয়াকে হত্যার জন্য সম্পূর্ণভাবে
দায়ী ইসরাইল : ওআইসি
হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)। গত সপ্তাহে ইরানের রাজধানী তেহরানে গুপ্ত হামলার শিকার হয়ে প্রাণ হারান তিনি। এই হত্যাকান্ডের পেছনে ইসরাইল জড়িত বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হচ্ছে। যদিও ইসরাইল এই হামলায় জড়িত থাকা বা না থাকার বিষয়ে কিছুই বলেনি।
সৌদি আরবে বুধবার ৫৭ সদস্যের এই সংস্থাটির বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে সংস্থাটির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'এই জঘন্য হামলার জন্য অবৈধ দখলদার শক্তি ইসরাইলকে সম্পূর্ণরূপে দায়ী করছে ওআইসি'। এছাড়া এই হামলাকে ইরানের সার্বভৌমত্বের 'গুরুতর লঙ্ঘন' হিসেবে বর্ণনা করেছে সংস্থাটি। ওআইসির বর্তমান চেয়ারম্যান গাম্বিয়া। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু টাঙ্গারা বলেছেন, ইসমাইল হানিয়ার এই জঘন্য হত্যাকান্ড এবং গাজায় চলমান যুদ্ধ এই অঞ্চলকে আঞ্চলিক সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, 'ইরানের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখন্ডতার বিরুদ্ধে এই আগ্রাসন এবং দেশটির ভূখন্ডে একজন রাজনৈতিক নেতাকে হত্যার এমন কাজকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা যায় না।